প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৩, ০৩:৪২ পিএম
নরসিংদীর বেলাবতে বিয়ের দাবিতে মুসলিম প্রেমিকা হিন্দু প্রেমিকের বাড়িতে দুই দিন ধরে অবস্থান নিয়েছে। এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের সুটুরিয়া গ্রামের পাল বাড়িতে। প্রেমিকার অবস্থানের পর পরই প্রেমিক বাড়ি থেকে পালিয়েছেন। জানা যায়, প্রেমিক-প্রেমিকা দু’জন একই গ্রামের বাসিন্দা।
স্থানীয়রা জানান, ওই মুসলিম প্রেমিকার বিয়ের পর তার স্বামী বিদেশ চলে যায়। বিদেশ যাওয়ার পর একই গ্রামের জুয়েল পালের সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে যান ওই নারী। পরে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে, যা গোপনে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে রাখে প্রেমিক জুয়েল পাল। এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে প্রেমিকার কাছ থেকে স্বর্ণালংকারসহ কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় জুয়েল পাল নামের প্রেমিক।
পরে ওই নারীর স্বামী দেশে ফিরলে তার স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অন্তরঙ্গ ছবি ও ভিডিও আছে বলে জানিয়ে দেয় প্রেমিক জুয়েল। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া ও সম্পর্কের টানাপোড়ন হয়। ঘটনাটি স্বামীর বাড়ি ও বাবার বাড়ির সবাই জেনে গেলে জুয়েল ওই নারীকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে তার স্বামীর বাড়ি ছেড়ে আসতে বলে।
প্রেমিক জুয়েলের কথা মতো স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি চলে আসার পর জুয়েল পালের অন্যত্র বিয়ে ঠিক করে পরিবার। গত রোববার ছিল জুয়েল পালের গায়ে হলুদ। এ খবর শুনে প্রেমিকা বিয়ের দাবিতে রোববার জুয়েলের বাড়িতে অবস্থান নিলে জুয়েল বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
ওই নারী জানান, জুয়েল ধর্ম ত্যাগ করে তাকে বিয়ে করবে বলে তারা একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হন। পরে এ সম্পর্কের ছবি ও ভিডিও’র ভয় দেখিয়ে তার কাছ থেকে বিভিন্ন সময় প্রায় চার লাখ টাকা নেয় জুয়েল। এক পর্যায়ে স্বামীর বাড়ির লোকজনের কাছেও সম্পর্কের সব কথা ফাঁস করে দেয়। বিয়ে করবে বলে স্বামীর বাড়ি থেকে নিয়ে এসে অন্যত্র বিয়ে করার প্রস্তুতি নেয়। এ কারণে নিরুপায় হয়ে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন বলে দাবি তার।
জুয়েল পালের বাবা জানান, আগে এ ঘটনা জানতাম না। এখন আমার বাড়িতে অবস্থান করার পর সব জানতে পেরেছি। জুয়েল বর্তমানে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। এলাকার চেয়ারম্যান ও মাতব্বররা বিষয়টি মিমাংসা করার চেষ্টা করছে।
পাটুলী ইউনিয়নের সদস্য আব্দুর রশিদ বলেন, খবর শুনে গত রোববার (১২ মার্চ) রাতেই চেয়ারম্যানসহ বসেছিলাম। ছেলের অভিভাবকদের বলেছিলাম গত সোমবার (১৩ মার্চ) সকাল ৮টার মধ্যে ছেলে যেখানেই থাকুক যেন বাড়িতে আনেন। কিন্তু তারা আনতে পারেননি। আবারও আমরা বসে দেখি কি করতে পারি।
পাটুলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইফরানুল হক ভূইয়া জামান বলেন, সমস্যা হচ্ছে ছেলে-মেয়ে দুই ধর্মের। তারপরও দেখি সামাজিকভাবে ঘটনাটি মিমাংসা করা যায় কী না।
/এএল