• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাসর রাতেই প্রাণ গেল লিটনের

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৩, ১২:৩২ এএম

বাসর রাতেই প্রাণ গেল লিটনের

ছবি: সংগৃহীত

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পরে লিটন আলি ফের বিয়ে করেছিলেন। স্বপ্ন ছিল ৯ বছরের মেয়ে আর নতুন স্ত্রীকে নিয়ে সুখের সংসারের। কিন্তু স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে গেল লিটন আলির। বাসর রাতেই মৃত্যু হল তাঁর। বাসর রাতে নতুন স্ত্রীর হাতে গহনা পরিয়ে দিচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই অসুস্থ হয়ে ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন লিটন আলী (৪৩)। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় রাতে এই ভাবে স্বামীকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ নববধূ ফাতেমা খাতুন। তাঁর হাতে এখনও মেহেন্দির রঙ। কিন্তু তা এখন ধুসর লাগছে তাঁর কাছে। শনিবার সমাহিত করা হয়েছে লিটনকে। চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের তেঘরী গ্রামের বাসিন্দা লিটন আলি । তিনি পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহ জেলার ধোপাবিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। শুক্রবার তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় ঝিনাইদহ জেলার গান্না ইউনিয়নের কালুহাটি ঘোপপাড়া গ্রামের ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আড়াই মাস আগে মারা গিয়েছেন লিটনের প্রথম স্ত্রী। তাঁদের লামিয়া খাতুন নামে একটি ৯ বছরের মেয়ে রয়েছে। লিটন আলির প্রথম স্ত্রী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ডায়রিয়া ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মেয়েকে দেখাশোনা করার জন্য আবার দ্বিতীয় বিয়ে করতে রাজি হন তিনি। বাসর রাতে প্রথম স্ত্রীর রেখে যাওয়া সোনার বালাটি দ্বিতীয় স্ত্রীর হাতে পরাচ্ছিলেন লিটন। সেই সময় হঠাৎ অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হাসানুর রহমান জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার নাগাদ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় লিটন আলিকে। প্রথমে তাঁদের মনে হয় যে ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে লিটন আলির। তিনি বলেন, “তাঁর ইসিজি করার জন্য বলা হয়েছিল। ইসিজি রিপোর্টের পর দেখা যায় হার্ট অ্যাটাক হয়েছে । হাসপাতালের তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। তাঁকে রাজশাহীর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর।”

বিয়ের পরেই স্বামীকে হারিয়ে শোকে পাথর ফাতেমা খাতুন। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ফারুক হোসেন চাঁন বলেন, “ লিটন আমার ভাইপো। দিন কয়েক আগেই তাঁর মেয়ে মাকে হারিয়েছে। আর বাসর রাতেই দ্বিতীয় স্ত্রী বিধবা হল। এমন হৃদয় বিদারক দৃশ্য খুব কম দেখা যায়।” বাবাকে হারিয়ে বারেবারে মূর্ছা যাচ্ছে লামিয়া খাতুনও।
 

আর্কাইভ