প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৩, ১০:২৫ পিএম
মাহফুজ রহমান, জয়পুরহাট প্রতিনিধি
সরকারিভাবে বরাদ্দ থাকার পরও জয়পুরহাটের কালাইয়ে ৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৩০০ টাকা হারে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে উপজেলা পর্যায়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও জেলা পর্যায়ে শিক্ষা মেলায় অংশগ্রহণ করতে ১৬ হাজার ২ শত টাকা তোলা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। আর অফিসের নির্দেশে বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা এসব চাঁদার টাকা আদায় করছেন। এবারের শিক্ষা সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ‘মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার দীক্ষা’। এসব প্রতিষ্ঠানে চাঁদা আদায়ে বিব্রত এলাকার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ।
উপজেলা শিক্ষা অফিস ও বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশব্যাপী জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ উপলক্ষে উপজেলা শিক্ষা অফিসের আয়োজনে আগামী ১৪ মার্চ কালাই উপজেলা পরিষদ চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং একই দিনে জেলা পর্যায়ে শিক্ষা মেলা অনুষ্ঠিত হবে। এ দুই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন উপজেলার ৫৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। শিক্ষা মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সফল করতেই এভাবে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদার টাকা আদায় করা হচ্ছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের নির্দেশে পাঁচটি ইউনিয়ন সদরে অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নিকটে অন্যান্য বিদ্যালয়ের প্রধানগণ ৩০০ টাকা হারে চাঁদার টাকা জমা দিয়েছেন। জোড় করেই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ৫৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নিকট থেকে মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে এসব টাকা আদায় করেছেন।
কালাই মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে উপজেলা শিক্ষা অফিসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও শিক্ষা মেলা নিয়ে সভা হয়েছে। সেই সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৩০০ টাকা করে চাঁদা আদায়ের কথা বলা হয়েছে। এটা অফিসের সিদ্ধান্ত।
মোসলেমগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশে টাকা আদায়ের পর অফিসে জমাও দেয়া হয়েছে। আমি একাই এ টাকা আদায় করিনি। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন সদরে অবস্থিত সবাই আদায় করেছেন।
মোলামগাড়ীহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুব হোসেন বলেন, আমাকে এক প্রতিষ্ঠান টাকা দিয়েছে। আর সবাই অফিসেই জমা দিয়েছে।
বেচখণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, আমরা নিরুপাই, অফিসের নির্দ্দেশ মানতে বাধ্য। এ উপজেলার ৫৪টি বিদ্যালয়ের প্রধানকেই ৩০০ টাকা হারে জমা দিতে হয়েছে। এমন ঘটনায় সবাই বিব্রত।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নিকট থেকে টাকা আদায়ের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আর কাউকে টাকা আদায় করতেও বলিনি। যদি কেউ আমার কথা বলে থাকে তা মিথ্যা বলেছে।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা জান্নাত আরা তিথি বলেন, টাকা আদায়ের বিষয় আমার জানা নেই। এই ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে আয়োজকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাজেদ/এএল