প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৩, ০৩:০৫ এএম
ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। ভুক্তভোগী নারী মামলা করেন এবং ওই মামলা তদন্তে ক্ষমতার অবৈধ ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে। তার স্ত্রী রিনা বেগম ভরণপোষণের দাবিতে অভিযুক্ত ব্যক্তির ভাড়া বাড়িতে অবস্থান নিয়ে এসব অভিযোগ করেন।
আজ বুধবার (৮ মার্চ) ধনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কবির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে একই দিন সকালে ওই বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় রিনা বেগমের অবস্থান টের পেয়ে বাসায় তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে আওলাদের পরিবার।
অভিযুক্ত ব্যক্তি উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের বালিয়াকান্দি গ্রামের মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে আওলাদ হোসেন। তিনি পুলিশের উপপরিদর্শক। তার বাবা-মা বর্তমানে ভোলা শহরের অফিসারপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। সেখানেই তার স্ত্রী অবস্থান নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী আওলাদের স্ত্রী রিনা বেগম মানিকগঞ্জের বাইচাইল গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গেছে, রিনা বেগমের দ্বিতীয় স্বামী আওলাদ। রিনা দুই সন্তানের জননী। প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে আওলাদ রিনা বেগমকে বিয়ে করেন। রিনা বেগমের প্রথম স্বামী ছিলেন সৌদি প্রবাসী।
ভুক্তভোগী রিনা বেগমের অভিযোগ, তার স্বামী এসআই আওলাদ হোসেন বর্তমানে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত রয়েছেন। মানিকগঞ্জ আদালতে তার বিরুদ্ধে করা যৌতুক মামলায় কয়েক দিন আগে আওলাদকে মুলাদি থানা থেকে ক্লোজড করে বরিশাল পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়। প্রায় এক বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে আওলাদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। রাজধানীর একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে গোপনে ভিডিও ধারণ করার পর ব্ল্যাকমেইল করে। পরে তাকে আওলাদ বিয়ে করেন। তার কাছ থেকে প্রায় সাত লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এদিকে ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জে পাঁচ লাখ টাকা কাবিনে বিয়ে করেন তারা। তবে বিয়ের কয়েক দিন পর যৌতুকের জন্য তাকে অমানবিক নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতনের ঘটনায় তিনি আওলাদের বিরুদ্ধে মানিকগঞ্জ আদালতে একটি যৌতুক আরেকটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পরে আওলাদ এ ক্ষোভে তাকে ভরণপোষণ দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে তার ভোলার বাসায় অবস্থান নিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার অবস্থানের সংবাদ পেয়ে বাসায় তালা মেরে পালিয়ে গেছে আওলাদের পরিবার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আওলাদের পরিবারের কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কবির হোসেন জানান, এসআই আওলাদ তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আওলাদ তার স্ত্রীকে নিয়ে আর সংসার করতে চাচ্ছে না। তার স্ত্রীর অবস্থানের সংবাদ পেয়ে আওলাদের পরিবার বাসায় তালা মেরে পালিয়ে গেছে। আওলাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে।
ভোলা সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন ফকির জানান, এ ঘটনাটি পুলিশের জানা নেই। কোনো অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।