দেশজুড়ে ডেস্ক
দেশে বেড়েই চলছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সোমবার (২৮ জুন) থেকে টানা এক সপ্তাহ চলবে কঠোর লকডাউন। আর তা বাস্তবায়নে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ। এমন খবরে গ্রামের বাড়িতে ছুটতে শুরু করেছে মানুষজন। আর এতেই মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে বেড়েছে যাত্রীদের চাপ। ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও ছিল চোখে পড়ার মতো।
শনিবার (২৬ জুন) সকালে শিমুলিয়া ঘাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
নৌপথে লঞ্চ-স্পিডবোট বন্ধ থাকায় ফেরি দিয়েই নদী পার হচ্ছে মানুষজন। ফেরিতে পণ্যবাহী গাড়ির চেয়ে ব্যক্তিগত গাড়িই বেশি পারাপার হচ্ছে। একই সঙ্গে পারাপার হচ্ছে জরুরি সেবামূলক অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য গাড়ি। মানুষের ভিড়ের কারণে পা রাখার ঠাঁই ছিল না। স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে যাত্রীরা নদীর স্রোতের মতো বাড়ি ফিরছেন।
ঘাট ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে ছোট-বড় ১৪টি ফেরি চলছে। এ ছাড়া ঘাট এলাকার দুই পাড়ে সহস্রাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় আটকা পড়ে আছে। এমন অবস্থায় বিভিন্ন চেকপোস্টে ঘাটে আসা যাত্রীবাহী গাড়ি আটকে দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবুও কিছুতেই মানুষ মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। ফলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।
ঘাট এলাকার প্রবেশমুখ শিমুলিয়া-ভাঙ্গার মোড়ে দেখা যায়, যাত্রীরা হেঁটে ঘাটে ঢুকছেন। এ সময় কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সোমবার থেকে কঠোর লকডাউন। বাড়ি থেকে নাকি বের হওয়া যাবে না। ঢাকায় তারা কাজ করে খান। কাজ বন্ধ থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। তাই আগেভাগেই ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ছুটছেন তারা।
গণপরিবহন না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ভেঙে ভেঙে গন্তব্য যেতে পরিবার-পরিজন নিয়ে নানা বিড়ম্বনায় পড়ছে মানুষ। শিমুলিয়ার ৩ নম্বর পন্টুন সংযোগ সড়ক বর্ষার পানিতে জলাবদ্ধতা হওয়ায় দুর্ভোগ বেড়ে গেছে।
মিরপুর থেকে শরীয়তপুরের গ্রামের বাড়ি যাচ্ছেন সৈয়দ রাসেল। তিনি বলেন, খুব কষ্ট করে মিরপুর থেকে শিমুলিয়া ঘাট পর্যন্ত এসেছি। রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশের পাহারা। বড় গাড়ি চলে না। তবে ছোট গাড়িগুলো ঠিকই চলছে। ৫০ টাকার ভাড়া ২০০ টাকা নিচ্ছে।
এ দিকে শুক্রবার ছুটির দিনেও শিমুলিয়া ঘাটে সারাদিন যাত্রীদের চাপ ছিল। সকাল থেকে শুরু হওয়া ভির বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বাড়তে থাকে। এর মধ্যে রাতে ঘোষণা আসে সোমবার থেকে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ হচ্ছে। এ জন্য শনিবার ভোরে উভয়মুখী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ।
বিআইডব্লিউটিসির এজিএম সফিকুল ইসলাম জানান, ভরা বর্ষার কারণে পদ্মায় পানি বেড়ে ঘাটে জলাবদ্ধতা হয়েছে। তবে ঘাটের রেম উঁচু করে ফেরি ঘাট আরও ওপর দিকে আনার জন্য বিআইডব্লিউটিএকে বলা হয়েছে। চাপ বেড়ে যাওয়ায় সব ফেরিই চলছে। তারপরও অপেক্ষারত যানের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, রাজধানী থেকে যেমন লোকজন ঘরে ফিরছে, আবার নানা প্রয়োজনে জরুরি কাজে রাজধানীতেও যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। তাই দুই দিকেই চাপ বেড়েছে।
মামুন/এএমকে
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন