• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বার্ন ইনস্টিটিউটে ৫ ও ঢামেকে ২ জন আশঙ্কাজনক

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৩, ০২:১৬ এএম

বার্ন ইনস্টিটিউটে ৫ ও ঢামেকে ২ জন আশঙ্কাজনক

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় ভবন ধস ও বিস্ফোরণের ঘটনায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঁচজন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে চারজন চিকিৎসাধীন আছেন। 

 

এদের মধ্যে বার্ন ইনস্টিটিউটের পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া ঢামেকে ভর্তি চারজনের মধ্যে দুইজনের চিকিৎসা চলছে আশঙ্কাজনক অবস্থায়। আহতদের আর্তচিৎকারে ভারি হয়ে উঠছে হাসপাতলের পরিবেশে। ডাক্তার-নার্সদের পাশপাশি স্বজনরা তাদের সুস্থ করে তুলতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন পাঁচজনই ফিনিক্স ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কর্মরত। তাদের মধ্যে সহকারি ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আকবর আলীর শরীরের ৩৭ শতাংশ,  সহকারী ম্যানেজার হাফিজুর রহমানের আট শতাংশ, অফিস পিয়ন জহুর আলীর ৪৪ শতাংশ, অফিস এক্সিকিউটিভ  আশরাফুজামানের ছয় শতাংশ  ও অপর কর্মী আশা আক্তারের ৩৮ শতাংশ পুড়ে গেছে। 

রোববার বিকালে বার্ন ইউনিটের আবাসিক সার্জন এসএম আইউব হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আমাদের এখানে ৬ জন রোগী এসেছিল। এদের মধ্যে ৫ জন দগ্ধকে ভর্তি নেওয়া হওয়া। নুর নবী নামে একজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অন্যান্য ইনজুরি থাকায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

তিনি বলেন, ভর্তি পাঁচজনের শ্বাস নালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই  আমরা কাউকে আঙ্কামুক্ত বলতে পারি না। 

বার্ণ ইনস্টিটিউটের জরুরী বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে দগ্ধ আকবর আলীর কলেজ পড়ুয়া মেয়ে সৈয়দা আদিকা আকবর বলেন, হাসপাতালের বিছানায় গিয়ে আমি বাবার সাথে দেখা করেছি। বাবা কথা বলতে পারছেন না। 

তিনি জানান, নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা গ্রামে তাদের বাড়ি। বর্তমানে পরিবার নিয়ে বনশ্রীতে থাকেন।  

দগ্ধ হাফিজুর রহমানের শ্বশুড় মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার খবর শুনে আমি হাসপাতালে এসেছি।  হাফিজুরের গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ। বর্তমানে পরিবার নিয়ে শ্যামলী পিসি কালচার থাকেন। এক ছেলে এক মেয়ের জনক তিনি।  

অফিস এক্সিকিউটিভ আশরাফুজ্জামানের এক স্বজন জানান, নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার লক্ষিপাশা গ্রামের মৃত সৈয়দ আহামেদের ছেলে আশরাফুজ্জামান। তিনি এক কন্যাসন্তানের জনক। ডেমরা রসুল নগর থাকতো।

ঢামেকের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মো. আলাউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, সায়েন্সল্যাবের ঘটনায় ঢামেকে আটজন এসেছিল। এখন চারজন চিকিৎসাধীন আছেন। তারা হলেন, কবির হোসেন, নূরনবী,  জাকির হোসেন জুয়েল ও সোহেল খান (২৮)। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের সবারই মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ইনজুরি আছে।

আহত সোহেল খান পেশায় সিএনজি অটোরিকশা চালক। বাসা রামপুরা মহানগর প্রজেক্ট। তার স্ত্রী রাহিমা বেগম সনাক্ত করেন বলেন, সোহেল সকালে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন।  পরে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে বের হন।  অটোরিকশা মালিকের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন।

আহত কামাল হোসেনের ছোট ভাই আমির হোসেন বলেন, কামাল হোসেন বেল্টের দোকানের কর্মচারী।  ভবনের নিজ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তিনি আহত হন। উপর থেকে ইট পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রপ্ত হন কামাল।

আহত কবির হোসেন বলেন, আমি নিউমার্কেটে একটি প্যান্ট শার্টের দোকানের সেলসম্যান। ভবনের নিচ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনি। যে যার মতো ছুটোছুটি করতে থাকে। এরপর আমার আর কিছুই মনে নেই।  আমি অচেতন হয়ে পড়ি। 

ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী তামান্না সুলতানা (২২)। সায়েন্স ল্যাবের ঘটনায় তিনিও আহত হন। অনার্স মার্কেটিং প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তামান্নাকে পপুলার হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে দুপুর দেড়টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। পরে চিকিৎসা শেষে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। 

তামান্নার মা পারভিন আক্তার বলেন সকালে বনশ্রী বাসা থেকে কলেজের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল তামান্না। পরে খবর পাই সে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। আল্লাহর রহমতে সে এখন আশঙ্কামুক্ত।

আর্কাইভ