প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৩, ০৫:৫৬ পিএম
বান্দরবানের নাইক্ষ্যছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের শূন্যরেখায় আশ্রিত ৬৭ পরিবারের ২৪২ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে আনার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত অষ্টম দফায় ওই ইউনিয়নের তুমব্রু বাজার থেকে বাসে করে তাদেরকে উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট পয়েন্টে আনা হয়। এ সময় স্থানান্তর কার্যক্রমের সময় উপস্থিত ছিলেন কুতুপালং ৭নং ক্যাম্পের সিআইসি (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) প্রীতম সাহা ও ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ। এই এক মাসে সেখান থেকে ৫৩০ পরিবারের মোট ২ হাজার ৫২৭ রোহিঙ্গাকে ক্যাম্পে আনা হয়।
কক্সবাজারস্থ আরআআসি অফিস সূত্র জানা যায়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফা রোহিঙ্গাদেরকে ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়। তখন ৩৬ পরিবারের ১৮৪ জন রোহিঙ্গা ছিল। এভাবে গত রোববার সর্বশেষ ২৪২ জন রোহিঙ্গাকে নেওয়া হয়। পরে অষ্টম দফায় মোট স্থানান্তর করা হয় ২৫২৭ জন রোহিঙ্গাকে। যাদের মধ্য থেকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধিত রোহিঙ্গা থেকে ৭ কিস্তিতে কুতুপালং সংলগ্ন ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে নেওয়া হয় ২৩৮৭ জনকে। এ সময় কিছু রোহিঙ্গা অনিবন্ধিত ছিল। যা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা বিড়ম্বনায় পড়ে। নতুন করে গণনা করা হয় গত বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি)। তখন গুনে পাওয়া য়ায় ২৪২ জন নতুন আশ্রিত রোহিঙ্গাকে। পরে তাদেরকে রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) ঘুমধুমের সেই আলোচিত ট্রানজিট ক্যাম্পে সরানো হয়।
সীমান্ত বসবাসকারীরা জানান, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে রোহিঙ্গারা যখন মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকছিল। তখন কিছু রোহিঙ্গা আটকা পড়েন মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের মাঝামাঝি ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায়। পরে পাঁচ শতাধিকের বেশি রোহিঙ্গা এতদিন সেখানেই বসবাস করছিল। যেখানে সর্বসাধারণের প্রবেশ নিষেধ।
এদিকে গত ১৮ জানুয়ারি রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) ও আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) মধ্যকার সংঘর্ষে একজন নিহত হন, ক্যাম্পে আগুনে পুড়ে বসতবাড়ি হারিয়ে তুমব্রু গ্রামে প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গা আশ্রয় নেন। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে গত ২৮ জানুয়ারি একটি কমিটি ওই রোহিঙ্গাদের তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া শেষে তাদের হস্তান্তর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রায় এক মাসে তুমব্রু থেকে সব রোহিঙ্গাকে হস্তান্তর কাজ শেষ হয়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, শূন্যরেখার রোহিঙ্গাদের তুমব্রু থেকে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে আর কোনো রোহিঙ্গা নেই। এখন সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড কমে আসবে।
কক্সবাজাস্থ শরনার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, তুমব্রুতে আশ্রিত সব রোহিঙ্গাকে উখিয়ায় সরিয়ে আনার কাজ শেষ হয়েছে। সর্বশেষ ৬৭ পরিবারের ২৪২ রোহিঙ্গাকে উখিয়ার কুতুপালং ট্রানজিট পয়েন্টে আনা হয়। সব মিলিয়ে ৫৩০ পরিবারের ২ হাজার ৫২৭ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর সম্পন্ন হয়েছে। ওখানে আর কোনো রোহিঙ্গা নেই।