প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩, ০৫:২৭ পিএম
জেলে ফারুকের জালে ধরা পড়েছে বঙ্গোপসাগরের বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক দাঁতিনা ভোল মাছ। বঙ্গোপসাগরের দুবলার চরে এই মাছ বিক্রি হয়েছে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায়।
আড়ৎদার দাম বেশি পাওয়ার জন্য রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মাছ দু’টি মোংলা থেকে চট্টগ্রামে পাঠিয়েছেন। গতকাল শনিবার বিকেলে দুবলার চরে ডাকা নিলামে ৬৩ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের এ মাছ দু’টির মূল্য ওঠে ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, শুধুমাত্র মাছের মূল্য তা নয়, এ মাছের মধ্যে বিশেষ ধরণের ফুলকি ও প্যাটা রয়েছে, যার প্রতি কেজির মূল্য প্রায় কয়েক লাখ টাকা।
সুন্দরবনের দুবলার চর থেকে শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মোংলা মৎস্য আড়ৎ ‘মেসার্স জয়মনি ফিস’ এর মালিক আল-আমিন এই দু’টি মাছ কিনে মোংলায় নিয়ে আসেন। মাছ দু’টি একনজর দেখতে মোংলা মাছ বাজারের উৎসুক লোকজন ভিড় জমায়।
‘মেসার্স জয়মনি ফিস’ এর মালিক আল-আমিন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে সাগরের গহীনে মাছ ধরতে গেলে ফারুক হোসেনের জালে এই মাছ ২টি ধরা পড়ে। তা দুবলার চরে নিয়ে আসার পর নিলামে তোলা হয়। ওই নিলামে ২০ থেকে ২৫ জন দরদাতার মধ্যে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়ে মাছ দুইটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কিনে নেই।
এর ভেতরে বড় মাছটির ওজন ৩৬ কেজি ৫০০ গ্রাম, দাম হাঁকা হয় ১১ লাখ এবং ছোট আকারের মাছটির ওজন হয় ২৭ কেজি, দাম ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বিরল প্রজাতির সামদ্রিক এ মাছ দুটির প্রতি কেজি মাছের মূল্য পড়েছে ২৯ হাজার ১৩৩ টাকা।
ব্যবসায়ী আল আমিন মাছ দু’টি সঠিক পদ্ধতিতে প্রসেসিং ও প্যাকেটজাত করে রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মোংলা থেকে চট্টগ্রামের বড় মাছের বাজারে পাঠিয়েছেন।
মোংলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ও মৎস্য সমবায় সমিতি সভাপতি মো. আফজাল ফরাজী বলেন, ‘দাতিনা ভোল মাছ এ অঞ্চলে খুবই কম পাওয়া যায়। মোাংলা পশুর নদী বা সুন্দরবনসংলগ্ন নদ-নদীতে আগে দুই-একটি মাছ পাওয়া গেলেও এখন কিছু দুর্বৃত্ত জেলে সেজে সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ মারে। ফলে এদিকে এখন আর এই মুল্যবান মাছ পাওয়া যায় না।’
দামের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মূলত এ মাছের ফুলকি-প্যাটা ও বালিশের কারণে দাম প্রচুর বেশি। এই মাছের প্যাটা ও বালিশ বিদেশে রফতানি হয় এবং এ দিয়ে ওষুধ তৈরি করা হয়।’
মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সামুদ্রিক ভোল মাছ খুবই দামি। কারণ এই মাছের বায়ুথলি দিয়ে বিশেষ এক ধরনের সুতা তৈরি করা হয়। এই সুতা ওপেন হার্ট সার্জারির কাজে লাগে। এছাড়া দামি বিয়ার তৈরিতেও ভোল মাছ ব্যবহৃত হয়।’