প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩, ১২:৫১ এএম
পটুয়াখালীর শ্রীরামপুর গ্রামে বিয়ের দাবিতে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে অনশনে বসেছেন এক এক ছাত্রীর মা। শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টা থেকে সদর উপজেলার মৌকরন ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের প্রধান শিক্ষক মো. রশিদ মাস্টারের বাড়িতে ওই নারী অবস্থান করছেন। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বাড়ি ছেড়েছেন প্রধান শিক্ষক। রশিদ মাস্টার পৃর্ব কালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ওই নারী একই ইউনিয়নের বাসিন্দা।
অনশনরত ওই নারী বলেন, রশিদ মাস্টার ছয় বছর ধরে আমাকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া বাসায় রেখেছে। আমার মেয়ে তার স্কুলে পড়তো। সেখান থেকে তার সঙ্গে আমার পরিচয়। আমাকে বিয়ের ছলনা দিয়ে সে এতদিন সম্পর্ক করেছে। সে আমাকে ঢাকায় নিয়ে বিয়ে করেছে। কিন্তু সেই বিয়ের কাগজ এখন পর্যন্ত দেয়নি। সে শুধুমাত্র কলেমা পড়েছে, কাবিন করেনি। তিনি আরও বলেন, তার (রশিদ) সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কারণে আমার বাবা-মা কেউ আমাকে আশ্রয় দেয় না। আজকে আমি অসহায় হয়ে তার বাড়িতে এসেছি বিয়ের দাবিতে। আমার একটা মেয়ে। তাও তার জন্য ছেড়ে দিয়েছি। সে আমার একটি বাচ্চাও নষ্ট করেছে। সে বলেছে আমাকে কোনো দিন ছেড়ে যাবে না। সে কোরআন শরিফ নিয়ে কসম কেটেছে।
প্রতিবেশী রানী বেগম বলেন, সকালবেলা আমরা শুনতে পাই এক মহিলা আসছে বিয়ে করার জন্য। তার সঙ্গে কথা বলি। তিনি নাকি পটুয়াখালী থেকে এসেছেন। আগে কখনো তাকে দেখিনি। প্রধান শিক্ষকের স্ত্রী তানিয়া বেগম বলেন, ২০ বছর ধরে আমার স্বামীর সংসার করছি। এ রকম কোনো কিছু আমি আগে কখনো দেখিনি। আজ সকালে হঠাৎ করে এই মহিলা আমার ঘরে উঠে আমার স্বামীকে বলছে বিয়ে করতে। এটা আসলে ষড়যন্ত্র। আমার ছেলে রাজনীতি করে। আমাদের প্রতিপক্ষ একটি দল ষড়যন্ত্র করে এই মহিলাকে এখানে পাঠিয়েছে।
প্রধান শিক্ষক রশিদ মাস্টার বলেন, আমার বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদেরকে আমি চিহ্নিত করতে পেরেছি। স্থানীয় মেম্বারদেরকে আমি অবহিত করেছি। তারা যদি এটার সমাধান না করতে পারে তাহলে আমি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এর আগেও সে আমার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেছিল। মামলাটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। কারণ মামলায় যে ছবি ও ডকুমেন্ট দেখিয়েছে সেটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
আপনি বাড়ি ছেড়েছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর বাইরে চলে যাই। এরপর একটি স্কুলে প্রোগ্রাম ছিল সেই প্রোগ্রামে গিয়েছি। এখন আমি মেম্বারের বাড়িতে আছি। এদিকে মৌকরন ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য সাইদুল মেম্বার বলেন, সকালে আমি ওই খবর শুনে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে যাই। এ সময় ওই নারীকে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান শিক্ষক তাকে বিয়ে করেছেন। তবে কাবিননামা তিনি দেখাতে পারেননি। এমনকি তার আগের স্বামীকে তালাক দেওয়ার কোনো কাগজও তিনি দেখাতে পারেননি।