• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রেমিকার বাড়িতে বন্ধুকে রেখে পালালেন প্রেমিক, অতঃপর...

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৩, ০১:১৪ পিএম

প্রেমিকার বাড়িতে বন্ধুকে রেখে পালালেন প্রেমিক, অতঃপর...

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রংপুরে প্রেমিকার বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে বন্ধুর সহযোগিতায় ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছে প্রেমিক। এ সময় প্রেমিকার চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে মোটরসাইকেলসহ বন্ধুকে রেখে পালিয়ে যান প্রেমিক। দীর্ঘ সময় স্থানীয়দের মাধ্যমে সমঝোতার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলে ৯৯৯ ফোন করে পুলিশের শরণাপন্ন হন আটক যুবকের পরিবারের লোকজন। 

পরে ভোররাতে গেট ভেঙে বাড়িতে ঢুকে ওই ছাত্রীর মা ও চাচিদের লাঞ্ছিতসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে প্রেমিকের বন্ধুকে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। গত রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়নের পূর্বদেবু গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থানায় এজাহার দায়ের করলেও মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি পুলিশ।

ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার নেকমামুদ উচ্চ বিদ্যালয় এলাকার এক প্রবাসীর মেয়ে ও নবম শ্রেণির মাদ্রাসাছাত্রীর সঙ্গে বুড়ির বাজারের মুনছুর আলীর ছেলে দুলাল মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে ওই ছাত্রীর মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে বন্ধু রাকিবসহ বাড়িতে প্রবেশ করে দুলাল। এ সময় ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসলে দৌড়ে পালিয়ে যায় প্রেমিক দুলাল। তবে তার মোটরসাইকেলসহ বন্ধু রাকিবকে আটক করে এলাকাবাসী। রাতভর সমঝোতার নাটকের পর পুলিশের সহযোগিতা নেয় দুলাল এবং রাকিবের পরিবার।

পীরগাছা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাড়ির গেট ভাঙচুর করে বাড়িতে প্রবেশ করে প্রেমিকার মা ও চাচিদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ সময় তাদের চিৎকারে অন্যরা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও পুলিশ মারধরসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ করেছেন মেয়েটির মা। 

পরে মোটরসাইকেল রেখে জোরপূর্বক রাকিবকে নিয়ে যায় পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্থানীয় চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ মুকুল ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেনের মাধ্যমে  মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেন। 

ভুক্তভোগী মেয়েটির মা অভিযোগ করে বলেন, রাকিবকে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ আমাকে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে আঘাত করে। আমার জাদেরকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে। আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেছে। আমাদের মামলা না নিয়ে উল্টো তাদের মামলা নেওয়ার পাঁয়তারা করতেছে পুলিশ। আমাদের বাড়িতে গভীর রাতে  ঢুকে পুলিশের এমন আচরণে আমি ন্যায়বিচার কামনা করছি।

প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী ইতি বলেন, রাকিবকে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ বন্দুক তাক করে নিয়ে গেছে। পুলিশ ওই বাড়িতে প্রবেশের সময় থেকে চলে যাওয়া পর্যন্ত টিনের গেট, টিনের বেড়া ও বাড়িতে ইচ্ছামতো ভাঙচুর করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল।

ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন বলেন, আমি থানায় গিয়ে একটি এজাহার দাখিল করেছি। কিন্তু মামলা রুজু হয়নি। 

তাম্বুলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ মুকুল বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। ভুক্তভোগী পরিবারসহ স্থানীয়দের কাছে জানলাম ওই দিন রাকিব নামে একজনকে নিয়ে প্রবাসীর বাড়িতে গিয়েছিল দুলাল। পুলিশ নাকি ওই বাড়ির নারীদের ওপর চড়াও হয়েছিল। ভুক্তভোগীরা আমার কাছে সঠিক বিচার চেয়েছেন।

পীরগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমুর রহমান বলেন, ওই নারীর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ৯৯৯ এ ফোন পাওয়ার পর জিম্মি করে রাখা ছেলেটিকে পুলিশ উদ্ধার করতে যায়। এ সময় পুলিশের পরিচয় পাওয়ার পরও বাড়ির বাহিরে তাদের এক ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পুলিশ জিম্মি করে রাখা ছেলেটিকে উদ্ধারের চেষ্টা করলে তাদের ওপর হামলা চালায় তারা। ওই নারী এনআইডি ছাড়াই অন্য মাধ্যমে থানায় একটি এজাহার পাঠিয়েছে। এনআইডি ছাড়া এজাহার গ্রহণের সুযোগ নেই। 

তিনি আরও বলেন, দুলাল ও তার বন্ধুকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে যায় ওই নারী ও পরিবারের লোকজন। পরে দুলাল পালিয়ে গেলে রাকিবুলকে আটকে রাখা হয়। তাদের দাবি দুলাল ফিরে এসে তার মেয়েকে বিয়ে না করা পর্যন্ত রাকিবুল তাদের জিম্মায় থাকবে। এ দাবি ছিল তাদের অন্যায়। 

আর্কাইভ