• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করতে নানিকে হত্যা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩, ০১:৩০ এএম

স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করতে নানিকে হত্যা

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

জেলার ফতুল্লায় আয়েশা বেগম (৬১) নামে এক বৃদ্ধাকে হত্যার দায়ে মো. রাকিবকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই পুলিশ। জানা গেছে, তারা সম্পর্কে নানি-নাতি।

সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জে পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।এর আগে, গত সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় এ হত্যাকারণ্ডর ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গত বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) নিহতের মেয়ে নাসরিন আক্তার বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকা থেকে মো. রাকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই জানায়, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাদীনির মা আয়েশা বেগম সিদ্ধিরগঞ্জের তার ভাইয়ের বাসা থেকে বাদীনির বাসায় আসেন। বাদীনির মা বাসায় আসার পর ওইদিন বিকেল থেকে রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার পূর্বে যেকোনো সময় অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা বাদীনির বাড়িতে প্রবেশ করে তার মাকে শ্বাসরোধে করে হত্যা করে। বাদীনির রুমের তালা খুলে রুমে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা, ৭ ভরি স্বর্ণালংকারসহ মোট ৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়।

মামলার বিশ্বস্ত সোর্স নিয়োগ করে এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জানতে পারেন যে, ভুক্তভোগী আয়েশা বেগমের মেয়ে বাদিনী নাছরিন আক্তারের ছেলে ভিকটিমের নাতি ঘটনার সঙ্গে জড়িত। রাকিব ব্যাংক লোন নিয়ে মোবাইলের মাধ্যমে অনলাইনে জুয়া খেলে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং তার চলাফেরা ছিল উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির।

এই তথ্য পাওয়া মাত্র তদন্তকারী টিমের সন্দেহ হলে আসামি রাকিবের কর্মস্থল মডেল গার্মেন্টস এ তথ্য নিয়ে জানা যায়, আসামি ঘটনার দিন তার কর্মস্থলে যাননি। পরবর্তীতে পিবিআই টিম  রাকিবকে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি তাদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

পিবিআই আরও জানায়, ঘটনার দিন বাসায় কেউ থাকবে না সেটা সে আগে থেকে জানতে পেরে তার কর্মস্থলে না গিয়ে গোপনে বাসার আশেপাশে অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে বিকেলে বাসার সবাই অন্যত্র চলে গেলে ঘটনাকালীন সময় সন্ধ্যায় বাসার মেইন গেইট দিয়ে প্রবেশ করে হাতুড়ি দিয়ে বাদিনীর রুমের তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে আলমারির লক ভেঙ্গে স্বর্ণালংকারসহ টাকা পয়সা লুট করে নেয়।

তারপর হঠাৎ তার নানী আয়েশা বাসায় চলে আসলে সে ভয় পেয়ে যায়। তখন সে কাপড় ও গেঞ্জি দিয়ে তার নানির গলায় প্যাঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

তারপর রাকিব হত্যার কাজে ব্যবহৃত ভাঙ্গা তালা ও গেঞ্জির কাপড়ের অংশ বিশেষ চাষাঢ়া মোড়ে ময়লার ড্রেনে ফেলে দেয় এবং লুট করা স্বর্ণ কালিবাজারের স্বর্ণ পট্টিতে ভাসমান অজ্ঞাত ব্যক্তির নিকটে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয় এবং কেউ যেন সন্দেহ না করে সেজন্য দ্রুত বাসার আশেপাশে অবস্থান নিয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে থাকে।

গ্রেপ্তার রাকিব হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে নিজের সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মোহাম্মদ মোহসিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলার পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

আর্কাইভ