• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

প্রচারপত্রে নাম না থাকায় ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করল আ.লীগ নেতা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩, ০৬:২৯ পিএম

প্রচারপত্রে নাম না থাকায় ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করল আ.লীগ নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

একটি মসজিদের উন্নয়নের জন্য আয়োজিত ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দিয়েছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায় স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম। ওয়াজ মাহফিলের প্রচারপত্রে ওই নেতার নাম না থাকায় তিনি ওই ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের বেলতলী বাজার মসজিদ প্রাঙ্গণে এই ওয়াজ মাহফিল হওয়ার কথা ছিল। এ নিয়ে এলাকায় মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এবিষয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই মসজিদ শুধু আমার ইউনিয়নে নয় বরং আমার ওয়ার্ডের মধ্যে পড়েছে। প্রচারপত্রে আমার নাম না থাকায় সম্মানহানি হয়েছে। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা মসজিদ কমিটির লোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন। ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হলে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। এ জন্য সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখার লক্ষ্যে আমি মাহফিল স্থগিত করার জন্য বলেছি।

এদিকে উপজেলার বেলতলী বাজার মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক তুহিন আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, মাত্র দুই বছর আগে এই মসজিদ টিন দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদটির উন্নয়ন ও পাকা করার লক্ষ্যে আজ বিকেলে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। পোস্টার ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে দুই সপ্তাহ ধরে প্রচার চলছিল। ইতিমধ্যে একটি তোরণও নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রচারপত্রে (পোস্টারে) ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলামের নাম না থাকায় দুই দিন আগে তিনি ওই মাহফিল বন্ধ করার নির্দেশ দেন। পরে মসজিদ কর্তৃপক্ষ গোলযোগ এড়াতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাহফিল স্থগিতের ঘোষণা দেন। আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে মাহফিল বন্ধ হওয়ায় মুসল্লিদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করে। এ নিয়ে মুসল্লিদের মধ্যে উত্তেজনাও দেখা দেয়।

বেলতলী বাজার মসজিদ কমিটির সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন বলেন, এমনিতেই মসজিদের কোনো টাকা নেই। মাহফিলের প্রস্তুতি নিতে গিয়ে তোরণ, পোস্টার, ডেকোরেশন ও বক্তাদের অগ্রিম সম্মানীসহ আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। ওয়াজ মাহফিল সফলভাবে অনুষ্ঠিত হলে অন্তত পাঁচ লাখ টাকা আয় হতো। ওই নেতার কারণে মসজিদের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হলো।

উপজেলা বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূরে আলম বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। এটা খুবই দুঃখজনক।’ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত শিকদার আজ বিকেলে বলেন, ‘ওই নেতার জন্য আমাদের সরকার ও আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। ওই নেতার বিচার হওয়া উচিত।’

ওই মসজিদের ইমাম হাফেজ সিয়াম আহমেদ বলেন, ‘ওই পোস্টারে কোনো রাজনৈতিক দলের নেতার নাম নেই। নেতার নাম না থাকায় মসজিদ উন্নয়নে করা ওয়াজ মাহফিল বন্ধ হওয়া, এটা কেয়ামতের আলামত। আমার কাছে অনেক মুসল্লি তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।’

সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, কয়েক মাস ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। এর প্রভাব ইউনিয়ন ও গ্রামের মসজিদেও পড়েছে বলে মনে হচ্ছে। এগুলো কারো জন্যই ভালো নয়।

আর্কাইভ