ছবি: সংগৃহীত
সিটি নিউজ ডেস্ক
হোটেলের রুমে ফিরে মেয়েকে বালতির ভিতরে মৃত অবস্থায় দেখতে পেয়ে রাগের মাথায় স্ত্রীকে গলা চেপে হত্যা করা হয়েছে। কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল রুম থেকে মা ও কন্যাশিশুর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার স্বামী জেমিন বিশ্বাস পুলিশের কাছে প্রাথমিকভাবে এই স্বীকারোক্তি দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে জেমিন অপর ২ সন্তানকে নিয়ে পলাতক ছিলেন।
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোরে চট্টগ্রাম বাকলিয়া থানা এলাকার শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন মার্শা পরিবহন সার্ভিসের কাউন্টারের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানার ওসি মো. আব্দুর রহিম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গ্রেফতার জেমিন বিশ্বাস (৪০) চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার বৈন্ডব এলাকার দুলাল বিশ্বাসের ছেলে। নিহতরা হলো- জেমিনের স্ত্রী সুমা দে (৩৬) এবং তার আট মাস বয়সী এক মেয়ে।
শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় কলাতলী এলাকার আবাসিক হোটেল সি আলিফের ৪১১ নম্বর কক্ষ থেকে মা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারা (জেমিন ও সুমা) তিন সন্তানকে নিয়ে গত মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজার বেড়াতে এসে সাগরপাড়ের আবাসিক হোটেল ‘সি আলিফ’-এ উঠেছিলেন।
ওসি আব্দুর রহিম বলেন, ‘শুক্রবার কক্সবাজার শহরের এক আবাসিক হোটেল কক্ষ থেকে মা-মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটে। মধ্যরাতে ঘটনায় পলাতক স্বামী জেমিন বিশ্বাস চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানাধীন শাহ আমানত সেতুসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে বলে তথ্য জানায় কক্সবাজার জেলা পুলিশ। পরে শনিবার ভোররাতে ওই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর জেমিনের স্বীকারোক্তির বরাতে ওসি বলেন, ‘সুমা দে আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর সুমা অসুস্থ বোধ করলে জেমিন তাকে শুয়ে থাকতে পরামর্শ দেন। পরে তিনি (জেমিন) প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মেয়ে এবং সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া আরেক মেয়েকে নিয়ে নাস্তা আনতে হোটেল থেকে বের হন। এর কিছুক্ষণ পর হোটেলের অভ্যর্থনা কক্ষে দুই সন্তানকে রেখে স্ত্রীকে দেখার কথা বলে হোটেল কক্ষে যান।’
‘জেমিন হোটেল কক্ষে ফিরে স্নানকক্ষের বালতির পানিতে ছোট মেয়েকে মৃত অবস্থায় এবং স্ত্রীকে উপুর হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় রাগের মাথায় জেমিন তার স্ত্রীকে ঘুষি মারেন এবং গলা চেপে হত্যা করেন’, বলেন ওসি। আব্দুর রহিম জানান, ঘটনার পর জেমিন বিশ্বাস দুই সন্তানকে নিয়ে বাঁশখালী ফিরেন যান। পরে সেখানে আত্মীয়ের বাড়িতে সন্তানদের রেখে শুক্রবার রাতে আত্মগোপনের উদ্দেশে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলেন। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘শনিবার ভোর রাতে পালিয়ে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানা পুলিশ জেমিন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করেছে। বাকলিয়া থানা পুলিশ গ্রেফতার ব্যক্তিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। তাকে কক্সবাজার নিয়ে আসা হচ্ছে।’ জেমিন বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত গণমাধ্যমে জানানো হবে বলেও জানান এসপি।
আরিয়ানএস/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন