• ঢাকা বুধবার
    ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১

শহীদ আলতামতির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চায় সন্তানেরা

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩, ০৩:৩৮ এএম

শহীদ আলতামতির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চায় সন্তানেরা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

কবরে জোটেনি কোনো ফুল কিম্বা শ্রদ্ধাঞ্জলি। অত্যন্ত ঘরোয়া পরিবেশে শহীদ আলতামতির ২৭তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হয়েছে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি আজকের এইদিনে বিএনপির গণবিরোধী একদলীয় ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হরিণাকুন্ডু উপজেলার ভাতুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের বার মুখে পুলিশের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিতহ হন ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুন্ডু উপজেলার গুড়পাড়া ভাতুড়িয়া গ্রামের আলতামতি। তিনি একই গ্রামের আব্দুর রহমান বিশ্বাসের মেয়ে এবং আব্দুল খালেকের স্ত্রী। মৃত্যুকালে তিনি ৪ বছরের ছেলে রিপন এবং ৪ মাসের শিশু পুত্র শিপনকে রেখে যান। আলতামতির ভাই সাংবাদিক মো. আশরাফুল ইসলাম সে দিন অনেক চেষ্টা করেও বিএনপি আর পুলিশের বাধার মুখে কারো বিরুদ্ধে মামলা করতে সাহস পায়নি। এমনকি হুমকি-ধামকির শিকার হয়ে বাড়ি ছাড়তে হয়েছে তাকে। একই বছর ১২ জুন সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। তারপর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় আলতামতিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে তার অসহায় শিশু সন্তানদের ভোরণ পোষণের ব্যবস্থা করা হোক। অনেক চেষ্টার পর তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইয়ুব হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই এমপি ও সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রেহানা আক্তার হিরার সহযোগীতায় ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলতামতির অসহায় শিশুপুত্রদের ভোরণ পোষণের জন্য এক লক্ষ টাকার একটি পরিবার সঞ্চয়পত্রের ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু পিতা আব্দুল খালেক দ্বিতীয় বিয়ে করার কারণে পারিবারিক অভাব অনটনে সেই টাকা আস্তে আস্তে তুলে পরিবারের পিছনে ব্যয় করতে থাকে। আর রিপন শিপন মা-বাবাহীন বাউন্ডলে জীবন নিয়ে বড় হতে থাকে। শিক্ষাদিক্ষা কিছুটা গ্রহণ করলেও কারো কপালে জোটেনি একটি পিয়নের চাকরিও। চাকরিতে বড় অঙ্কের ঘুষ দিয়ে ঢোকার সামর্থ্য তাদের নেই। এই সরকার অনেক অসহায় পরিবারকে চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু তাদের কপালে চাকরি দূরের কথা একটু সাহায্যও জোটেনি। কোনো নেতাও এখন তাদের আর সেভাবে খোঁজ-খবর রাখেন না। মৃত্যুবরণ করার প্রথমদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মশিউর রহমান জোয়ার্দ্দার কিছুটা খোঁজ-খবর রাখতেন। এখন তাও রাখেন না। এ প্রসঙ্গে আলতামতির বড় ছেলে নিঝুম রেজা রিপন বলেন মা হারানোর সঙ্গে সঙোগ আমরা সবকিছুই হারিয়ে ফেলেছি, লেখাপড়া তেমন শিখতে পারিনি, ছোট ভাই শিপন এইচএসসি পাস করেছে কিন্তু কপালে চাকরি জোটেনি। কেউ আর এখন খোঁজ-খবরও রাখেন না। এখন আমাদের একটাই দাবি ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার অবৈধ গণবিরোধী একদলীয় নির্বাচনের কারণে আমার মাসহ যারা সেদিন নিহত হয়েছিলেন তাদের সকলকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মতো রাষ্ট্রীয়ভাবে শহীদের স্বীকৃতি প্রদানের দাবি জানাই।                                                      

 

 

এএল/

আর্কাইভ