প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩, ০৬:০৪ পিএম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দাবি আদায়ের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক। শিক্ষার্থী বা চাকরীপ্রার্থী কর্মচারীদের দাবি নিয়ে ফটকের তালা দিয়ে নির্ধারিত শিফটের গাড়ি আটকে দেওয়ার দৃশ্য দেখা যায় মাঝেমধ্যেই। এতে ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করলেও স্থায়ী সমাধান না পাওয়ায় ফের একই পথে হাটতে হয় বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
গত ১০ দিনের ব্যবধানে দুই দফায় প্রধান ফটকে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ গতকাল রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) খেলোয়াড় ও শিক্ষার্থীদের একটি দল প্রধান ফটকে তালা দেন। দুপুর দেড়টায় তারা ফটকের সামনে জড়ো হয়ে ফটক আটকে দেন তারা। আন্তবিশ্ববিদ্যালয় টুর্নামেন্টে সকল ইভেন্টে টিম পাঠানো ও আন্তবিভাগ টুর্নামেন্ট চালুসহ বেশ কিছু দাবি নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা।
ফলে দুইটায় নির্ধারিত শিফটের গাড়ি ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে পারেনি। পরিবহন অফিসের তথ্যমতে এসময় গাড়িতে শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী অবস্থান করছিলেন। গাড়িতে থাকা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হলে তারা এ ধরণের আন্দোলন নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এরআগে গত ২৫ জানুয়ারি তারা একই দাবি নিয়ে ফটকে তালা দেন। সেদিন প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে তালা খুলে দিলেও দাবি পুরণ হয়নি দাবি করে ফের বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা।
পরে প্রক্টরের নেতৃত্বে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আলোচনার আহ্বান জানালে দুপুর আড়াইটায় তালা খুলে দেওয়া হয়। পরে প্রক্টর অফিসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় বসার আশ্বাস দেন প্রক্টর।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, এর আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় চ্যাম্পের সব ইভেন্টে টিম পাঠানোর দাবি নিয়ে বিকেল চারটায় ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন খেলোয়াড়রা। আন্দোলনের মুখে দাবি মেনে নেয় প্রশাসন। এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন চাকরি প্রার্থী অস্থায়ী কর্মচারীরা। এরআগেও মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন দাবি নিয়ে ফটকে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে এক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি মিটিং করে ফটকে তালা দিলে পরের দিন কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক তপন কুমার জোদ্দার কালের কণ্ঠকে বলেন, আমাদের কাছে এলে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি নিয়ে আমরাও কাজ করবো। কিন্তু এভাবে ফটক আটকে অন্যদের জিম্মি করা এটা সমর্থন করা যায়না। আমরা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছি সেখানে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলেও শিক্ষকদের গাড়ি কখনো আটকানো হতো না। কিন্তু এখানের কালচার ভিন্ন। এসব দাবি সঙ্গে শিক্ষকদের কোনো সম্পর্ক নেই তবুও সকল শিক্ষককে কেন জিম্মি করা হবে? এটা ঠিক নয়। আমরা এটা চাই না।
প্রক্টর অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন আজাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, তারা আমাকে না জানিয়েই ফটকে তালা দিয়েছে। আমি নতুন দায়িত্বে এসেছি বিষয়টি আমি অবগত ছিলাম না। আমাকে আগে বিষয়টি জানিয়ে সমাধানের চেষ্টার সুযোগ দেওয়ার দরকার ছিল। না জানিয়েই গিয়ে গেট আটকানোর বিষয়টি আমার কাছে ভালো মনে হয়নি। কথায় কথায় এভাবে গেট আটকানোর সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে, এটা ঠিক নয়। আমরা চেষ্টা করছি ছাত্রদের নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে বসে আলোচনা করার।