• ঢাকা সোমবার
    ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

হিরো আলম: আমাকে দুর্বল ও ছোটো ভাবলে ভুল করবেন

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩, ১২:২২ এএম

হিরো আলম: আমাকে দুর্বল ও ছোটো ভাবলে ভুল করবেন

দেশজুড়ে ডেস্ক

ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় হিরো আলম বলেছেন, ‘হিরোকে যারা জিরো বানাতে এসেছে, তারাই জিরো হয়েছে’

জাতীয় সংসদকে খাটো করতে বিএনপি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আলোচিত মুখ আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলমকে উপনির্বাচনে প্রার্থী করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। হিরো আলম জিরো হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গত শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক ফেসবুক লাইভে ওবায়দুল কাদের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানান হিরো আলম।

লাইভে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ করে হিরো আলম বলেন, “আপনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন, হিরো আলম নাকি জিরো হয়েছে। এটা ভুল বলেছেন। হিরোকে কেউ কখনো জিরো করতে পারে না। হিরো হিরোই থাকে। আমাকে জিরো কেউ বানাতে পারেনি, পারবেও না। এটা আপনি ভুল বলেছেন। হিরোকে যারা জিরো বানাতে এসেছে, তারাই জিরো হয়েছে।”

হিরো আলমকে নাকি বিএনপি নির্বাচনে দাঁড়িয়ে (দাঁড় করিয়ে) দিয়েছে ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, “আমাকে কেন বিএনপি ভোটে দাঁড় করিয়ে দেবে। ভোটের মাঠে আমার পাশে কি বিএনপির কাউকে দেখেছেন। আমি স্বতন্ত্ৰ প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছি। আমাকে কেউ দাঁড় করিয়ে দেয়নি।”

হিরো আলম আরও বলেন, “বিএনপির নেতা ফখরুল ইসলাম স্যার বলেছেন, এ সরকার এখন হিরো আলমের কাছে অসহায় হয়ে গেছে। এ সরকার অসহায় হয়েছে কি না, আমি জানি না। তবে আমি হিরো আলম যে অসহায় হয়েছি, এ প্রশ্নের জবাব কে দেবে? আমার ভোটের ফলাফল যে কেড়ে নেওয়া হলো, এ প্রশ্নের জবাব কে দেবে?”

“প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলব। সবার বিচারই তো আপনি করেন, আমাদের বাংলাদেশের পুরো বিচার। তাই আমিও আপনার কাছে বিচার দিলাম যে, আমার ভোট সুষ্ঠু মতো হলো, কিন্তু আমার ভোটের ফলাফল সুষ্ঠু মতো রায় দেওয়া হলো না কেন? আমি এর বিচার চাই” যোগ করেন হিরো আলম।

লাইভে সবার উদ্দেশে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে হিরো আলম বলেন, “আমি হিরো আলম চ্যালেঞ্জ করছি সুষ্ঠু নির্বাচন দেন। প্রতিটি সেন্টারে সিসি ক্যামেরা দেন। বুথে সিসি ক্যামেরা দেন। ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) দেবেন না। কারণ ইভিএম হলো চোর। বাইরের দেশে ইভিএম ডাস্টবিনে ফেলে দিছে। সেটা আমাদের দেশ কুড়িয়ে এনে ভোট করছে। এখানেও কারচুপি হয়। ইভিএমে একটা টিপি মারলে আরেকটায় যায়।”

হিরো আলম বলেন, “আমাকে একটা প্ল্যান-চক্রান্ত করে হারানো হয়েছে। তাছাড়া ভোটে আমরা যে গণজোয়ার দেখেছি, হিরো আলমের হারার কোনো প্রশ্নই ওঠে না।”

তিনি বলেন, “আর একটা কথা ওবায়দুল কাদের স্যার বলেছেন যে, পার্লামেন্টকে ছোট করা হবে হিরো আলম যদি সংসদে যায়। আমার কথা- আমি যদি পার্লামেন্টে গেলে পার্লামেন্ট ছোটই হয়, তাহলে যখন আমরা নমিনেশন পেপার কিনি তখন আপনাদের কিন্তু এটা বলা উচিত ছিল যে, হিরো আলমের কাছে যেন মনোনয়নপত্র বিক্রি করা না হয়।”

হিরো আলম বলেন, “আপনারা বলেছেন গণতন্ত্রের দেশ, সবাই নির্বাচন করতে পারে। সবাই যদি নির্বাচন করতেই পারে এবং আপনাদের আইনে থাকে। তাহলে আমি ভোটে গেলে আপনার সংসদ ছোট হবে কেন? সংসদের তো ছোট হওয়ার কথা নয়! তাহলে আপনাদের আইন করতে হবে, যার যোগ্যতা নেই সে পার্লামেন্টে যেতে পারবে না। যারা লেখাপড়া নেই, সে যেতে পারবে না। আর একটা বিষয়- আপনারা আইন করেছেন যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করবে তাদের ১% ভোটারের স্বাক্ষর লাগবে। যদি তাই হয় তাহলে যারা দলীয়ভাবে ভোট করে, তাদের ওয়ান পার্সেন্ট লাগে না কেন? আইন যদি সবার জন্য সমানই হয়, তাহলে এই আইন চেঞ্জ করতে হবে।”

লাইভের শেষদিকে হিরো আলম বলেন, “আমি কোনো দলে থাকলে আপনারা দেখতে পারতেন যে, আমি কোনো দলে যোগ দিয়েছি। আমি আগে থেকে কোনো দলে যোগ দেইনি। না বিএনপি, না আওয়ামী লীগ, না অন্য কোনো দল। তাই আমাকে নিয়ে কোনো দল বেশি মাতামাতি করবেন না। তা আমি চাই না। আগেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করেছি, এখনো স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোট করেছি। তাই একজন আরেকজনকে দোষ দেবেন না‍‍`, যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, “আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী। কোনো দলের সঙ্গে আমার কোনো লবিং নেই। তাই আপনারা কেউ কোনো দলীয় বিষয়ে আমাকে নিয়ে কথা বলবেন না। আর আপনারা আমাকে এতটা দুর্বল ও ছোট ভাববেন না। আমাকে দুর্বল ভাবলে ভুল করবেন, ছোট করলেও ভুল করবেন।‍‍`

হিরো আলম বলেন, “আমাকে জনগণ কতটা ভালোবাসে, আমার ভোটের ফলাফল কেড়ে নেওয়াতেই আপনারা বুঝতে পেরেছেন। সারা বাংলাদেশ জেগে উঠেছে এটা নিয়ে, কথাবার্তা বলছে। আমি ছোট হলে আমাকে নিয়ে কেউ কথা বলতো না। আজকে প্রতিটা টকশো, খবর, দেশ-বিদেশে হিরো আলমের ফলাফল কেড়ে নেওয়া নিয়ে এত মানুষ কথা বলছে। তাই বলছি, আমি যেন আমার ভোটের ফলাফল নিয়ে সুষ্ঠু বিচার পাই এবং এই বিচার নিয়ে আমি আবারও যারা আমাকে ছোট করে ভাবছেন, আমি সংসদে গিয়ে দেখিয়ে দিতে চাই, যে সংসদে কথা বলতে পারি কি-না, জনগণের জন্য কাজ করতে পারি কি না। সংসদে যাওয়ার সুযোগ দিয়ে তারপর কথা বলবেন।”

প্রসঙ্গত, ১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী এ কে এম রেজাউল করিম তানসেনের কাছে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে হেরে যান হিরো আলম। পরে সেদিন রাতে সংবাদ সম্মেলনে ১০ কেন্দ্রে ফলাফল পাল্টানোর অভিযোগ তুলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম। গণমাধ্যমে এটি দেখার পর সিইসি ফোন করে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন।

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ