• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

জীবনে আর কিছু চাই না, আমার জান্নাতকে সুস্থ করো আল্লাহ!

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২৩, ০৯:১০ পিএম

জীবনে আর কিছু চাই না, আমার জান্নাতকে সুস্থ করো আল্লাহ!

কামরুল হাসান রুবেল, সাভার প্রতিনিধি

ছোট্ট শিশু জান্নাত। দুই বছর বয়স তার। গুটি গুটি পায়ে হাঁটতে শিখেছে মাত্র। এক-আধটু কথাও বলতে পারে, আব্বু-আম্মু বলে। ঢাকার ধামরাই পৌর শহরের পাঠানটোলা মহল্লার বাসিন্দা হাবিব খান ও তাহমিনা আক্তার দম্পতির মেয়ে সে। হাবিব-তাহমিনার এক দশকের সংসার জীবনে প্রাপ্তি কেবল এই ‘জান্নাত’।

বছর চারেক আগে এক ছেলে সন্তান জন্ম দেয় তারা। সেই শিশুটি পৃথিবীর আলো দেখার আগেই পাড়ি জমিয়েছে পরপারে। তার বছর খানেক পর তাদের কোল জুড়ে আসে ফুটফুটে ‘জান্নাত’। এতে হাবিব-তাহমিনা দম্পতি যেন সত্যিই জান্নাত খুঁজে পেলো, আর সেই খুশিতে প্রথম সন্তান হারানোর ব্যথা কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন তারা।  

জান্নাতকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছিল এই দম্পতির সকল হাসি-আনন্দ। কিন্তু হঠাৎই যেন তাদের জীবনে নেমে এলো অন্ধকার। তাদের একমাত্র সন্তানটি এখন ঢাকার শিশু হাসপাতালের নিচতলায় ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মুখে হাসি নেই তার। জীবনকে উপভোগ করার আগেই তার শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধি ব্লাড ক্যানসার।

এই খবরে পুরো পরিবারটিই এখন অথৈ সাগরে ভাসমান। তাদের চোখের সামনে অন্ধকার। জান্নাতের বাবা হাবিব খান অঝোরে কেঁদে উঠেন- এ জীবনে আর কিছু চাই না, এ জীবনে আমার এই জান্নাতকে সুস্থ করে দাও আল্লা‘। কথাগুলো বলতে গিয়ে তিনি আরও বেশি কাঁদলেন। 
হাবিব স্থানীয় বাটা কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। মেয়ের চিকিৎসার জন্য দৌড়াতে গিয়ে চাকরি খুঁইয়েছেন তিনি। এখন এই বেকার বাবা আহাজারি- আমার জান্নাতটাও কি আমাদেরকে ছেড়ে যাবে ভাই? এ প্রশ্নের উত্তর কঠিন। সত্যিই কঠিন?

শিশুটির বাবা হাবিব খান বলেন, হঠাৎ ভীষণ জ্বর হয় জান্নাতের। চিকিৎসা দেয়া হলেও জ্বর ভালো হয় না। পরে নানা পরীক্ষার পর ধরা পরে জান্নাতের ছোট্ট শরীরেতে বাসা বেধেছে দূরারোগ্য ব্লাড ক্যানসার।

তিনি আরও বলেন, মেয়ের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিন অফিস কামাই দেয়ায় চাকরি হারাই। এখন বেকার জীবন পার করছি। এতদিন চিকিৎসা করাতে গিয়েই ধার-দেনাসহ সব টাকার উৎস শেষ হয়ে গেছে।

জান্নাতের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণ অর্থ। কিন্তু বেকার বাবার পক্ষে এই টাকা জোগার করা কষ্টসাধ্য। জান্নাতের পরিবার তার চিকিৎসার জন্য সাহায্যের হাত পাতছেন মানুষের দ্বারে দ্বারে।

ধামরাই উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এসএম হাসান (শুভ্র)আমাদের সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃক জটিল দূরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত রোগীদের আর্থিকভাবে কিছু সহযোগিতা করা হয়ে থাকে। তাই ভুক্তভোগী যদি তার সন্তানের চিকিৎসা ব্যয়ের সাহায্যের জন্য আমাদের কাছে আবেদন করেন, তাহলে তাকে এই আর্থিক সহযোগিতাটি পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে পারি।

চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন তাকে কেমোথেরাপি দেয়ার। চিকিৎসকরা বলেছেন, জান্নাত ক্যানসারের প্রথম স্টেজে আছে।

জান্নাতের বাবা বলেন, চিকিৎসা করাতে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। এখন কিভাবে কি করবো সেটাই বুঝতেছি না! কিন্তু আমার মেয়েটাকে যে কোনো মূল্যে বাঁচাতে চাই। পুনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে চাই। এই এক জান্নাত ছাড়া তো ভাই আমাদের আর কিচ্ছু নাই। তাই আমার মেয়েটাকে বাঁচাতে সরকার ও বিত্তবানদের এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি।

জান্নাতের বাবার বিকাশ ও নগদ পারসনাল নাম্বার: ০১৯৯০৫০১১৯৮। এই নম্বরে শিশুটির জন্য মানবিক সাহায্য পাঠানো যাবে। অথবা সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ০১০০২২৬০৮২৯৩৪, ধামরাই শাখা, জনতা ব্যাংক। এই নম্বরেও টাকা পাঠানো যাবে।    
 

 

এএল/

আর্কাইভ