প্রকাশিত: জানুয়ারি ২১, ২০২৩, ১০:১৬ পিএম
খালি কন্টেইনার থেকে মালয়েশিয়ার কেলাং বন্দরে উদ্ধার হওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোর রোহিঙ্গা নয়। সে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের সাত পুকুরিয়া এলাকার দিনমজুর ফারুক এবং রোকেয়া দম্পতির ছেলে রাতুল (১৪)।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাতুলের বাবা দিনমজুর ফারুক মিয়া ও স্থানীয় এলাকাবাসী।
ফারুক মিয়া বলেন, টিভিতে রাতুলের ছবি দেখে আমরা তাকে শনাক্ত করি। মাস দুয়েক আগে বাড়ি থেকে হারিয়ে যায় মানসিক ভারসাম্যহীন রাতুল। ভেবেছিলাম নিজে নিজেই ফিরে আসবে, তাই আর জিডি করিনি। সেদিন টিভিতে দেখে চিনতে পারি এটা আমাদের হারিয়ে যাওয়া ছেলে।
কিশোরের বাবা আরও বলেন, তিন সন্তানের মধ্যে রাতুল সবার বড়। শিশুকাল থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন সে। কয়দিন পরপর এদিক সেদিক চলে যায়, আবার ফিরে আসে। আপনারা আমার ছেলেটাকে যেভাবে হোক ফিরিয়ে আনুন, দোহাই লাগে আপনাদের।
ইউপি সদস্য মো. শহিদুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, টিভিতে রাতুলের ছবি দেখে তার বাবা ফারুক মিয়া আমার কাছে আসে। আমিও ভালো করে দেখে নিশ্চিত হই এটা ফারুকের ছেলে রাতুল। আমরা রাতুলকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে এনে দিতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।
ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছেলেটার ছবি পেয়ে আমি সাত পুকুরিয়া গ্রামের একজনকে পাঠালে তিনি ছেলেটাকে শনাক্ত করেন। আমি ছেলেটার অভিভাবককে ইউনিয়ন পরিষদে খবর দিয়েছি। তারা এলে ছেলেটাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে আইনি পদক্ষেপে অগ্রসর হব।
মনোহরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আপনাদের (সাংবাদিকদের) মাধ্যমে খবর পেয়েছি। যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আমি ওই এলাকায় যাচ্ছি। কনফার্ম হলে বিস্তারিত জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে যাওয়া ‘এমভি ইন্টেগ্রা’ জাহাজের একটি খালি কনটেইনারে আটকা পড়ে রাতুল। মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) মালেশিয়ার কেলাং বন্দরে জাহাজের একটি খালি কনটেইনারের ভেতর থেকে শব্দ শুনতে পান নাবিকরা। এরপরই কেলাং বন্দরকে জানানো হয়। পরদিন বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় জাহাজটি জেটিতে এনে কনটেইনার খুলে মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরকে উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তাকে রোহিঙ্গা বলে ধারণা করা হয়। বর্তমানে রাতুল মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।