• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১

‘দেশে আয় আগে, তোরে ৩-৪টা মামলায় ঢুকায়ে দিমু’

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩, ০৪:৪৬ পিএম

‘দেশে আয় আগে, তোরে ৩-৪টা মামলায় ঢুকায়ে দিমু’

দেশজুড়ে ডেস্ক

‘আমি আওয়ামী লীগ নেতা। তোরে ৩/৪টা মামলায় ঢুকায়ে দিমু। দেশে আয় আগে’ এই বলে এক সৌদি আরব প্রবাসীকে মুঠোফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বলই গ্রামের মৃত হারুন ঢালীর ছেলে সাবেক কেন্দ্রিয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক শাকিল ঢালীর বিরুদ্ধে।

একই গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসী লাভলু রাঢ়ী এই অভিযোগ জানিয়েছেন। তিনি মুঠোফোনে সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আমার ব্যবহৃত ইমু নাম্বারে ফোন করে আমাকে এ হুমকি প্রদান করেন শাকিল। এর আগে দুপুর দেড়টার দিকে প্রবাসী লাভলু রাঢ়ীর স্ত্রী রাবিয়া ইসলাম লাকিকে মারধর করে তার গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেন ওই ছাত্রলীগ নেতার বড় ভাই সেলিম ঢালী। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে প্রবাসীর স্ত্রী রাবিয়া ইসলাম টঙ্গিবাড়ী থানায় শাকিলের বড় ভাই সেলিম রাঢ়ীর নামে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে প্রবাসী লাভলু রাঢ়ী মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, সৌদির জেদ্দায় আমি ও শাকিল ঢালীর দুলাভাই আওলাদ হোসেন পাশাপাশি বাসায় থাকি। আমাদের দুজনের বাসায় যাতায়াত ছিল। প্রায় ৫ মাস আগে শাকিলের দুলাভাই দেলোয়ার হোসেন বলেন তার বাসা হতে ১০ হাজার রিয়েল (প্রায় ৩ লাখ টাকা) হারিয়ে গেছে। সে আমিসহ জেদ্দায় থাকা আরও ৩ জনকে তার টাকা নিয়েছি বলে সন্দেহ করছে বলে জানান। এ সময় আমি বলি যদি আমরা আপনার টাকা নিয়ে থাকি তবে আপনি আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দেন। পুলিশ এসে আমাদের ফিঙ্গার নিয়ে তদন্ত করে দেখুক। কিন্তু সে পুলিশের কাছে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ না করে আমাদের মক্কায় নিয়ে গিয়ে বলে আমাদের ‘চুরি করি নাই’ বলতে বলে। তার দেওয়া মিথ্যা অপবাদ হতে বাচঁতে আমরা মক্কায় গিয়ে সেটাও করেছি। পরে সৌদিতে জেদ্দায় আমি যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতাম সেই প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। তাই আমি জেদ্দার বাসা ছেড়ে দিয়ে দেলোয়ার হোসেনের বাসায় আমার দেশের বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য কিনে রাখা বেশকিছু মাল সামগ্রী আনতে যাই। কিন্তু তখন দেলোয়ার বলেন আমার রেখে আসা মাল সামগ্রী আনতে গেলে তার চুরি যাওয়া টাকা তাকে ফেরত দিতে হবে না হলে দেবে না। বিষয়টি আমি আমার দেশে থাকা আমার বড় দুই ভাইকে জানাই। আজ আমার বড় ভাই সেলিম রাঢ়ী, সামসু রাঢ়ী ও আমার স্ত্রী রাবিয়া ইসলাম লাকি আমার মালামাল আটকিয়ে রাখার বিষয়ে শাকিল ঢালীদের বাসায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে যায়। সে সময় শাকিলের বড় ভাই সেলিম ঢালী আমার স্ত্রীকে চড় থাপ্পর মারে, গলায় চাপ দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে এবং আমার স্ত্রীর গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে প্রবাসীর স্ত্রীর রাবিয়া ইসলাম লাকি বলেন, আমি আমার দুই ভাসুরকে নিয়ে আমার স্বামীর মালামাল আটকিয়ে রাখার কারণ জানতে চাওয়ায় আওলাদ হোসেনের সুমন্দি সেলিম রাঢ়ী আমাকে চড় থাপ্পর মারেন। আমাকে মেরে আমার মুখ দিয়ে রক্ত বের করে ফেলে। পরে গলায় চাপ দিয়ে ধরে আমার গলায় থাকা ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায়। আমার ভাসুররা আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। পরে আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।

এ ব্যাপারে শাকিল ঢালী নিজেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় কমিটির সাবেক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বলেন, আমার বাসায় এসে লাভলু ঢালীর স্ত্রী রাবিয়া আক্তার লাকি ৫/৬জন লোক নিয়ে আমার ভাইয়ের ওপর হামলা করে। আমরা কাউকে মারধর কিরনি এবং বিদেশে কাউকে আমি মামলা দেওয়ার হুমকিও দেইনি।

এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আল মামুন বলেন, বিদেশের ঘটনা নিয়ে দু-পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হওয়ায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

একই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজিব খান বলেন, অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আর্কাইভ