প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩, ১১:১০ পিএম
রাজধানী রূপনগর এলাকায় সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী মায়াকে (৩৭) হত্যার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, শিপন (৪৫) ও মো. আসাদুল ইসলাম (৩৫)।
পুলিশ জানায়, রোববার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি ও জ্যাকেট জব্দ করা হয়েছে।
এর আগে ভিকটিমের ভাই মো. আওলাদ হোসেন বাদী হয়ে রোববার রূপনগর থানায় মামলা দায়ের করেন৷
পুলিশ বলছে, তিন কারণে খুন হতে পারেন ওই নারী। ধর্ষণের পর হত্যা, অর্থের লোভ অথবা টাইলসের কাজ না পাওয়ার ক্ষোভ থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।
সোমবার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের ডিসি অফিসে এসব তথ্য জানান মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা।
তিনি বলেন, আসামিরা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। সোমবার আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। এক আসামির রিমান্ড ও আরেক আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার কথা রয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের মোটিভ সম্পর্কে তিনি বলেন, মোটিভের বিভিন্ন দিক আমরা খতিয়ে দেখছি। আসামি দুজনের একজন ভিকটিমের বাড়িতে থাকতেন। অন্য আসামি পাশের আরেকটি বাড়িতে থাকতেন। ভিকটিমের বাসায় তাদের আসা-যাওয়া ছিল। শিপন ভিকটিমের ভাড়াটিয়া ছিলেন। আসামি শিপনের ভিকটিমের বাসায় আসা যাওয়া ছিল। নিহতকে তারা মামানি বলে ডাকতেন। ঘটনার আগের দিন সন্ধ্যায় তারা এসেছিলেন।
বিভিন্ন মোটিভের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চুরি ডাকাতির উদ্দেশ্যে তারা বাসায় গিয়েছিলেন কিনা বা পূর্ব শত্রুতা ছিল কিনা এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিন তলার ভাড়াটিয়া শিপন টাইলস মিস্ত্রি ঠিক করে দিয়েছিলেন। ভিকটিম মায়া তাদের মিস্ত্রিকে কাজ না দিয়ে অন্য মিস্ত্রি ঠিক করেছিলেন। এটাও কারণ হতে পারে। সব বিষয়ে আমরা খতিয়ে দেখছি।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারদের দেয়া তথ্য যাচাইবাছাই করা হচ্ছে। তারা (আসামিরা) কিছু একটা বলেছেন আমরা শুনেছি। তারা কী উদ্দেশ্যে গিয়েছেন আমরা এখনই বলবো না। তারা খুনের কথা স্বীকার করেছেন। খুনে যে চাকু ব্যবহার করেছেন সেটি ও রক্তমাখা জ্যাকেট উদ্ধার করা হয়েছে।
ধর্ষণের ঘটনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভিকটিম যেহেতু নারী, একজন মহিলা পুলিশ অফিসার পা থেকে মাথা পর্যন্ত সুরতহাল করেছেন। এই বিষয়ে কিছু যদি থাকে মেডিকেল রিপোর্টে আসবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে ডিসি জসীম বলেন, আসামিরা ধরা পড়েছে, তবে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা এখনই আমরা বলতে চাচ্ছি না। তবে খুনের নেপথ্যে তিনটি মোটিভ হতে পারে। ধর্ষণ, অর্থ সংক্রান্ত কারণ থাকতে হপারে। নিহত মায়ার ভাড়াটিয়ারা জানতেন তার স্বামী বিদেশ থেকে টাকা পাঠান। এছাড়াও আরেকটা মোটিভ হতে পারে টাইলস মিস্ত্রি ঠিক করে দেয়ার পরও অন্য মিস্ত্রি দিয়ে কাজ করান নিহত মায়া। অন্য মিস্ত্রিরা কেমন কাজ করেছে দেখার কথা বলে আসামিরা মায়ার বাসায় প্রবেশ করেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডে দুজনই জড়িত।
উপ-পুলিশ কমিশনার জসীম উদ্দীন মোল্লা বলেন, ভিকটিমের বাসার চালের বস্তায় টাকা ছিল। টাকা আসামিরা খুঁজে পায়নি।
উল্লেখ্য যে, রাজধানীর মিরপুরে মায়া নামে এক নারীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গত শনিবার রাত সাড়ে ৩টায় রূপনগর `ট` ব্লকের ৩ নম্বর রোডের ৩৬ নম্বর বাসা থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।