প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩, ১০:১৭ পিএম
হাসপাতালে চাকরি দেয়ার নাম করে ১৫ জন প্রার্থীর কাছ থেকে ৩৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক জুয়েলসহ ৪ জনের নামে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।
১৫ জানুয়ারি (রোববার) দুপুরে মর্জিনা খাতুন নামে এক নারী জয়পুরহাট বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। সেই আদালতের বিচারক নিশিত রঞ্জন মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলায় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক জুয়েল ছাড়াও আসামি করা হয়েছে তার স্ত্রী পপি বেগম, শালিকা নিগার সুলতানা রিক্তা ও ড্রাইভার মোস্তফাকে।
মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী মর্জিনা খাতুন জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক জুয়েলের বাড়িতে দীর্ঘদিন থেকে ঝিয়ের কাজ করতেন। ১ ও ৩ নং আসামি তাকে বলেন, তোমার গরিব কোনো আত্মীয় স্বজন থাকলে কিছু টাকার ব্যবস্থা করে দিও আমরা তাকে হাসপাতালে চাকরির ব্যবস্থা করে দিব। এ বিষয়ে মর্জিনা ড্রাইভার মোস্তফার সাথে আলোচনা করলে সে বলে—স্যার ম্যাডাম অনেক লোককে চাকরি দিয়েছে তুমিও লোক জোগাড় করে তাদেরও চাকুরি হবে। এসময় সকল আসামিরা যোগসাজস করে চাকরি প্রার্থী জোগাড় করতে বলে এবং চাকরির জন্য ৪ লাখ, বড় পদের জন্য ১০ লাখ দিতে হবে। আর যোগদানের আগে ২ লাখ টাকা দিতে হবে, পরে বাকি টাকা দিতে হবে। সেই মৌখিক চুক্তি মোতাবেক বাদী জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ১৫ জনের কাছ থেকে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা রাশেদ মোবারক ও তার স্ত্রীকে প্রদান করে।
মামলায় আরও বলা হয়, এরপরে কিছুদিন অতিবাহিত হলেও চাকরি প্রার্থীদের চাকরি প্রদান না করে সময় ক্ষেপণ করতে থাকেন আসামিরা। প্রার্থীরা তাদের চালাকি বুঝতে পারলে তত্ত্বাবধায়ক ও তার স্ত্রী প্রার্থীদের ডেকে কাগজ জমা, ঢাকা যাতায়াত ঢাকায় মিটিং, ইউনিয়ফর্ম বানানো, পুলিশ তদন্ত, প্রত্যেকের স্মার্ট কার্ড তৈরি করতে হবে বলে আরও ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা নেয় এবং বাকি টাকাও চায়। এতে তারা নিয়োগপত্র চাইলে নিয়োগপত্র না দিলে বাদী প্রদানকৃত টাকা ফেরত চাইলে দিব দিচ্ছি বলে টালবাহানা করতে থাকে। এরপর একটি আপোষের আলোচনায় সেই টাকা ফেরত চাইলে তারা তারা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে। এছাড়া, হত্যাসহ মামলায় জড়িয়ে জেল খাটানোর ভয় দেখায়। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে মর্জিনা আদালতে মামলা দায়ের করেন।
ক্ষেতলাল থানার অফিসার ইনচার্জ রাজিবুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আদালত থেকে এখন পর্যন্ত (রোববার বিকেল পর্যন্ত) কোন কাগজ পাইনি। এ ব্যাপারে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রাশেদ মোবারক বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।