প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৩, ০৭:৫৬ পিএম
ঢাকায় অবস্থানকালে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দর হোটেলের ওপর যে ড্রোন ওড়ানো হয়েছিল তার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ড্রোনটি রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাসিন্দা এক কলেজছাত্রের ছিল। এর পেছনে তার কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না বলে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব বর্ষের সমাপনীতে যোগ দিতে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। রাজধানীর শাহবাগ সংলগ্ন ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে উঠেছিলেন তিনি।
পরদিন বিকালে ওই হোটেলের ওপর একটি ড্রোন উড়তে দেখা যায়। ওই ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এসএসএফের সহকারী পরিচালক (সহকারী পুলিশ সুপার) ইমরানুল ইসলাম। দক্ষতার সঙ্গে সেই কাজ করার স্বীকৃতি হিসেবে তাকে রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম-সেবা) দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ এর প্রকাশনায় ইমরানুল ইসলামের ড্রোন শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয় করার ঘটনায় পিপিএম পদক পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হয়। ভারতের রাষ্ট্রপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তার ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে এর আগে বিষয়টি প্রকাশ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
পুলিশ পদক-২০২২ প্রকাশনায় বলা হয়, ‘ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য তিন দিনের সফরে ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ঢাকায় আসেন। ওই সফরে সহকারী পুলিশ সুপার ইমরানুল ইসলাম বাসভবন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে অবস্থানকালে হোটেলের ওপর আন-আইডেন্টিফায়েড ড্রোনের উপস্থিতি শনাক্ত করেন। পরে কর্মদক্ষতার সঙ্গে তিনি সেটি দ্রুত নিষ্ক্রিয় করতে সমর্থ হন। এটা ছিল সম্ভাব্য ড্রোন আক্রমণ। তার কর্মদক্ষতা ও প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে পিপিএম-সেবা পদকে ভূষিত করা হলো।’
সেই সময় ড্রোন শনাক্ত ও নিষ্ক্রিয় করার ঘটনায় রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। সেই সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম এখন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার অপরাধ বিভাগের পরিদর্শক।
ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের ওপরে ড্রোন শনাক্তের ঘটনায় জাতীয় নিরাত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) এক কর্মকর্তা রমনা থানায় একটি জিডি করেছিলেন বলে আজ রোববার বিকালে গণমাধ্যমকে জানান তিনি।
সেই ঘটনার তদন্তে নেমে সেগুনবাগিচার বাসিন্দা এক কলেজছাত্রকে আটক করে পুলিশ। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত জানা যায় ড্রোনটি ওই ছাত্রের ছিল। উপহার হিসেবে মামার কাছ থেকে পাওয়া ড্রোনটি সেদিন উড়িয়েছিল সে। এর পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য ছিল না তার। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে জিডিটিও নিষ্পত্তি করা হয়।