প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৩, ০২:১৮ এএম
পিত্ত থলির পাথর অপারেশন করতে গিয়ে হার্নিয়ার অপারেশন ও গাট ছিদ্র করে ফেলাসহ নানা ভুলে রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ এনে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চার ডাক্তারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ন কবীরের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন মারা যাওয়া রোগীর ছেলে আহমদ রাফি।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে শেরেবাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পিত্ত থলির পাথর অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অপারেশনের আধাঘণ্টা পর ডা. নাদিম জানান, রোগীর হার্নিয়া ছিল, অপারেশন করা হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় হার্নিয়ার বিষয়ে রোগীর স্বজনদের কিছু জানাননি ডাক্তাররা।
মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন— হাসপাতালের সার্জারি ইউনিট-১-এর চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, ডা. নাদিম আহম্মেদ, ডা. তানিয়া ও ডা. আরাফাত।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী হেলাল উদ্দিন মামলা ও আদেশের বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন।
অপারেশনের সময় রোগীর গাটও ছিদ্র করে ফেলা হয়। বিষয়টি গোপন রাখেন ডাক্তাররা। এ সংক্রান্ত জটিলতায় রোগীর শরীরে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়লে জ্বর ও ডায়রিয়া হয় এবং পেট ফুলে যায়। পরবর্তীতে ডাক্তাররা বিষয়টি নিয়ে ভুল স্বীকার করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৩ ডিসেম্বর পিত্ত থলিতে পাথর অপারেশনের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলে হাসপাতালের সার্জারি ইউনিট-১ এর ডা. মোস্তাফিজুর রহমানের অধীনে ভর্তি হন মারুফা বেগম মেরী নামে এক নারী। আল্ট্রাসনোগ্রামসহ বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পিত্ত থলির পাথর অপারেশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরে ১৮ ডিসেম্বর তার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের আধাঘণ্টা পর ডা. নাদিম জানান, রোগীর হার্নিয়া ছিল, অপারেশন করা হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষায় হার্নিয়ার বিষয়ে রোগীর স্বজনদের কিছু জানাননি ডাক্তাররা।
এদিকে অপারেশনের সময় ওই রোগীর গাটও ছিদ্র করে ফেলা হয়। তবে বিষয়টি গোপন রাখেন ডাক্তাররা। গাট ছিদ্র সংক্রান্ত জটিলতায় রোগীর শরীরে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়লে জ্বর ও ডায়রিয়া হয় এবং পেট ফুলে যায়। পরবর্তীতে ডাক্তাররা বিষয়টি নিয়ে ভুল স্বীকার করেন। অপারেশনের ছয়দিন পর ২৪ ডিসেম্বর রোগীর গাট ছিদ্রের বিষয়টি জানানো হয়। পরে দ্বিতীয়বার অপারেশনের সিদ্ধান্ত হয়। জানানো হয়, চিকিৎসার সমস্ত খরচ বহন করবেন ডাক্তাররা। এরপর আবার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের ২৪ ঘণ্টা পর ৩ জানুয়ারি আইসিইউ থেকে রোগীকে কেবিনে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে আবার আইসিইউতে রাখা হয়। পরদিন ৪ জানুয়ারি মারুফা বেগম মারা যান।
এ ঘটনার পর ভুক্তভোগীর পরিবার শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের করতে যান। কর্তৃপক্ষ মামলা না নিয়ে তাদের আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেন। আজ বৃহস্পতিবার আদালতে এসে মামলা করেন মৃত নারীর ছেলে।