প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৩, ০৫:১৪ পিএম
খাগড়াছড়ির টিলাভূমি ও বাড়ির আশপাশে লাগানো গাছের কলা এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতিনিয়ত সমতলের বাজারে বিক্রি হচ্ছে। পাহাড়ি কলার চাহিদা বেশি হওয়ায় সারাদেশে বিক্রি হচ্ছে এসব কলা। এতে করে লাভবান হচ্ছে পাহাড়ের কলা চাষিরা।
বেশ সুস্বাদু হওয়ায় বিভিন্ন জেলায় এই অঞ্চলের কলার চাহিদা অনেক বেশি। পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রাম থেকে পাহাড়ি টিলা পথে কলা নিয়ে আসা হয় খাগড়াছড়ি কলা বাজারে। সেখান থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা কলা কিনে পণ্যবাহী ট্রাকের মাধ্যমে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও ঢাকাসহ সারাদেশে নিয়ে যায়।
খাগড়াছড়িতে দুই জাতের কলা বেশি দেখা যায়। একটি বাংলা কলা ও অন্যটি চাপা কলা, যার স্থানীয় নাম চম্পা কলা। উঁচু পাহাড়ের মাটিতে জন্মায় বলে এগুলোকে পাহাড়ি কলাও বলা হয়।
পুষ্টিগুণ বেশি হওয়ায় চাপা কলার চেয়ে দ্বিগুণ দামে বিক্রি হয় বাংলা কলা। যার কারণে এই কলার চাষ বেশি করে থাকে পাহাড়ের কৃষকরা সারাবছর এসব কলার ফলন পাওয়া গেলেও আগস্ট থেকে অক্টোবর মাসে ফলন হয় সবচেয়ে বেশি। এ সময় পাওয়া কলাগুলো আকারেও অনেক বড় হয়। বাজারে দামও বেশি পাওয়া যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাহাড় থেকে প্রচুর পরিমাণ কলা সমতলের বাজারে যায়। এছাড়াও প্রতি বুধবার বাজারের দিন খাগড়াছড়ি থেকে ছোট-বড় ১৫/২০ গাড়ি কলা যায় শহরে এবং এই জেলা থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন বাজার থেকে অনেক কলা সারাদেশে যায়।
চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি কলা বাজারে আসা ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, শহরের বাজারগুলোতে পাহাড়ি অঞ্চলের কলার চাহিদা অনেক বেশি। সমতল এলাকার কলা আর পাহাড়ের কলার গুণগত মানে অনেক পার্থক্য। তাই এখানকার কলার দামও বেশি। খাগড়াছড়ি থেকে কলা নিয়ে সমতলের বাজারে বসে থাকতে হয় না। প্রতি বছর কলার দাম বাড়ে। এ বছরও বেড়েছে। প্রতি ছড়া (কমপক্ষে ১০০ পিস) কলা মানভেদে ১০০ থেকে ১ হাজার টাকায় কিনে থাকি। কিছু কিছু এলাকার কলার ছড়া এত বড় হয়, সেগুলো ২ থেকে ৩ হাজার টাকায় কিনতে হয়।
খাগড়াছড়ি কলা ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন জানান, এই বাজারে বাইরে থেকে অনেক ব্যবসায়ী আসেন। প্রতি বাজারে ব্যবসায়ী এবং কৃষকের মাঝে প্রায় ৫০ লাখ টাকা লেনদেন হয়ে থাকে। এতে করে কৃষকদের বাজারে কলা এনে অপেক্ষা করতে হয় না। খুব সহজে উপযুক্ত দামে কলা বিক্রি করে বাড়ি চলে যেতে পারে। কৃষক এবং ব্যবসায়ী দুজনই লাভবান হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কিশোর কুমার মজুমদার বলনে, এই জেলায় বেশিরভাগ ভূমিই পাহাড়। এই পাহাড়ের মাটিতে চাপা ও বাংলা কলা ভালো ফলন হয়। সমতল বা স্যাঁতস্যাতে মাটিতে এগুলোর ফলন হয় না। পাহাড়ের মাটিতে এসব কলা আপনাআপনি বেড়ে ওঠে। তেমন পরিচর্যারও প্রয়োজন পড়ে না। শুধু কলা চারার আশপাশে জঙ্গল পরিষ্কার করলেই চলে। এটি অনেক লাভজনক ফল। এটি চাষে কোনো কৃষকের ক্ষতি নেই। তাই পাহাড়িরা প্রচুর কলাগাছ লাগিয়ে রাখে। এগুলো দিয়ে আয় হয় অনেক বেশি।