হাসান আল সাকিব, রংপুর ব্যুরো
ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। গত ১০ জুন রংপুরে ওয়াজ মাহফিল শেষে ঢাকার বাসায় ফেরার পথে তার সঙ্গী আবদুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দিনসহ নিখোঁজ হন তিনি। এর পর থেকে ত্ব-হা আলোচনায় আসেন। সাধারণ মানুষ ধরে নেয় তাদেরকে গুম করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে রংপুরের কোতোয়ালি থানায় করা হয় সাধারণ ডায়েরি (জিডি)।
ত্ব-হা ও সঙ্গীদের সন্ধান দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে হয় মানববন্ধন। মানববন্ধন হয়েছিল রংপুরেও। এমনই এক মানববন্ধনে অংশ নিয়েছিলেন ত্ব-হার বন্ধু সিয়াম ইবনে শরীফ। তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়।
এরই মধ্যে ১৮ জুন শুক্রবার দুপুরে রংপুরের শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসেন আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান। ফিরে আসেন তার অন্যান্য নিখোঁজ সঙ্গীরাও। পরে তাদের নেয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। ওই দিন সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলন করে পুলিশ জানায়, আবু ত্ব-হা ও তার সঙ্গীরা নিখোঁজ হননি, তারা স্বেচ্ছায় গাইবান্ধায় ত্ব-হার বন্ধু সিয়ামের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন। এর নেপথ্যে আবু ত্ব-হার পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কিছু কারণ রয়েছে। এর পর শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান ও তার সঙ্গী আবদুল মুহিত, গাড়িচালক আমির উদ্দিনকে রংপুর আদালতে নিয়ে জবানবন্দি নেয়ার পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ দিকে যেই বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে থাকার কথা বলা হচ্ছে, সেই বন্ধু সিয়াম তাদের (ত্ব-হা ও সঙ্গী) সন্ধান দাবিতে মানববন্ধনও করেছিলেন। অথচ ওই সময় তারই বাড়িতে গোপনে আশ্রয় নিয়ে অবস্থান করছিলেন নিখোঁজ ইসলামি বক্তা ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান।
বিষয়টি নানা প্রশ্নের জন্ম দিলে ত্ব-হার বাল্যবন্ধু সিয়ামের সংঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে সিটি নিউজ ঢাকা। রোববার (২০ জুন) মোবাইল ফোনে কথা হলে সিয়াম অভিযোগ করে বলেন, মোবাইল ফোন কোম্পানি অপ্পোর রংপুর অফিসে মানবসম্পদ (এইচআর) বিভাগে কর্মরত ছিলাম। ত্ব-হার ঘটনার জের ধরে আমাকে শনিবার (১৯ জুন) চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
সিয়াম দাবি করে বলেন, ‘তাকে না জানিয়েই গাইবান্ধার ত্রিমোহনিতে তার নিজ বাড়িতে তিন সঙ্গী নিয়ে ১০ জুন থেকে ১৮ জুন সকাল পর্যন্ত ত্ব-হা আদনান আত্মগোপন করেছিলেন।’
তিনি আরও জানান, আমার মা ত্ব-হাদের সেখানে লুকিয়ে থাকার ব্যাপারে কিছু জানায়নি। অথচ এখন অভিযোগ করা হচ্ছে, আমি নাকি তাদেরকে লুকিয়ে রেখে মানববন্ধন করেছি। এটা মিথ্যা অভিযোগ, আমি কিছুই জানতাম না। কিছু না জানার কারণেই অন্য বন্ধুবান্ধবের মতো তাদের সন্ধান দাবিতে মানববন্ধনে অংশ নিয়েছিলাম।
আপনার মা কেন ত্ব-হাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি আপনাকে জানালেন না?
এমন প্রশ্নের জবাবে সিয়াম বলেন, ত্ব-হা আমার বন্ধু। সে প্রায়ই আমাদের বাড়িতে যেত। আমাদের একসঙ্গে বেড়ে ওঠার অনেক স্মৃতি আছে। খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আমাদের। ত্ব-হা তার স্ত্রীকে নিয়েও আমাদের গ্রামে যেত। আর এবার নাকি সে (ত্ব-হা) আমার মাকে অনুরোধ করেছিল, তাদের আশ্রয় দেয়ার বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য।
পুলিশ ত্ব-হাকে উদ্ধারের পরই যখন ব্রিফিং করে বলেছে, তখনি আমি জানতে পারি ত্ব-হা আমাদের বাড়িতে ছিলো।
টিআর/এম. জামান
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন