প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৩, ০৭:৩৭ পিএম
আল কায়েদা মতাদর্শে অনুপ্রাণিত হিজরতকারী ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি)। রবিবার বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, চট্টগ্রাম ও টেকনাফ থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ সোমবার সকালে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- আব্দুর রব (২৮), মো. সাকিব (২৩), শামীম হোসেন (১৮), নাদিম শেখ (১৯), মো. আবছার (২০) এবং সাইদ উদ্দিন (১৮)।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, গ্রেফতারকৃত আব্দুর রব একজন কোরআনে হাফেজ এবং কওমি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে ২০১৯ সালে জুন মাসে সৌদি-আরব চলে যায়। সৌদিতে অবস্থানকালে সে অনলাইনে বিভিন্ন জিহাদি পোস্ট ও ভিডিও দেখে জিহাদের জন্য অনুপ্রাণিত হয়। অনলাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের একটি ভিডিও কমেন্টের সূত্রধরে সাঈদের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একইভাবে শামীম, সাকিব, নাদিমসহ ও আরও কয়েকজনের সাথে পরিচয় হয়। গ্রেপ্তারকৃত আব্দুর রব সমন্বয়ক হয়ে সবাইকে অনলাইনে একত্রিত করে শরীয়াহ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন, জিহাদ, প্রভৃতি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতো। পরবর্তীতে তাদের অনলাইনে বিদেশে অবস্থানরত এক বাংলাদেশী সহযোগীর সঙ্গে পরিচয় হয় এবং অডিও-ভিডিও কলে যোগাযোগ স্থাপন করে।
পরবর্তীতে সেই সদস্য লিবিয়ায় অবস্থানরত আরও একজন বাংলাদেশী এবং টেকনাফের স্থানীয় একজনের সঙ্গে সবার পরিচয় করিয়ে দেয়। সম্মিলিত আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয় আব্দুর রব, শামীম, সাকিব, নাদিম, সাইদসহ অন্য যারা হিজরতে রাজি তারা প্রথমে টেকনাফ গিয়ে তাদের স্থানীয় সহযোগীদের মাধ্যমে ট্রেনিং গ্রহণ করবে। পরবর্তীতে তারা বাংলাদেশে ইসলামী শাসন কায়েমের জন্য জিহাদ করবে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে সবাইকে নিজ নিজ ব্যবস্থাপনায় টেকনাফে যাওয়ার পরামর্শ প্রদান করলে গত নভেম্বরের ১৬ তারিখে সাকিব ও নাদিম টেকনাফ যায় এবং স্থানীয় সহযোগী ও গ্রেফতারকৃত আবছার তাদেরকে টেকনাফে ভাড়া বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে। আব্দুর রব ছুটি না পাওয়ায় যথাসময়ে দেশে আসতে ব্যর্থ হলে তারা টেকনাফের বাসায় অবস্থান করে তার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। গত ২২ নভেম্বর আব্দুর রব দেশে আসলে তার সহযোগী শামীম ঢাকা এয়ারপোর্ট হতে রিসিভ করে পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী তাদের অন্য সহযোগী ভাড়া করা বাসায় নিয়ে যায় এবং অবস্থান করে বিভিন্ন শলা-পরামর্শ করে। দুইদিন পর তারা দুইজন সাকিবদের সঙ্গে মিলিত হয় এবং তাদের অন্যান্য সহযোগীদের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন ভিত্তিক এ্যাপসে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দল গঠন করে স্থানীয় সহযোগীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশে জঙ্গিবাদের জন্য টেকনাফে হিজরত করে অবস্থান করছিল। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ১টি মামলা রুজু হয়েছে।
সাজেদ/