প্রকাশিত: জানুয়ারি ২, ২০২৩, ০৪:৪৫ এএম
টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে ইউপি নির্বাচনের সহিংসতা মামলায় সাগরদীঘি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার বিকালে ঘাটাইল-বাসাইল আমলি আদালতের বিচারক ফারজানা হাসনাত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানভীর আহমেদ জানান, রোববার দুপুরে শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে হেকমত সিকদারকে ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) তাকে গ্রেফতার করে। পরে পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারকে আদালতে পাঠায়। বিচারক রিমান্ডের শুনানির দিন সোমবার ধার্য করেছেন।
চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারের শাস্তির দাবিতে ঘাটাইল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী। এতে উপস্থিত ছিলেন- জেলা যুবলীগের সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম রফিক, ঘাটাইল উপজেলা যুব লীগের সহ-সভাপতি, যুবলীগ নেতা ও সাগরদিঘী মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি শাহাদত সিকদার, আওয়ামী লীগ নেতা শামস উদ্দিন, যুবলীগ নেতা আজহার উদ্দিন, ইউপি সদস্য সুরুজ ও মো. ওয়াজেদ, মালেকের স্ত্রী মর্জিনা, বোন মমতা, ভাই আ. খালেক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও হেকমত সিকদার গ্রেফতার হওয়ায় সাগরদীঘি এলাকায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ ঘাটাইলের সাগরদীঘি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাত ৩টায় গুলিতে আব্দুল মালেক (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। পরদিন ২৯ মার্চ গুপ্তবৃন্দাবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন।
স্থানীয়রা জানান, সাগরদীঘি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হেকমত সিকদারের লোকজন ব্যালট পেপারে ছিল মারছে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুল্লাহ বাহারের সমর্থকসহ এলাকাবাসী সেখানে হামলা চালায়। এ সময় স্কুল ঘরের ভেতর থেকে হামলাকারীদের প্রতি কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও গুলি চালায়।
এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আব্দুল মালেক নিহত হন। তিনি গুপ্তবৃন্দাবন গ্রামের বাসিন্দা নেছার উদ্দিনের ছেলে। পরে ২ এপ্রিল আব্দুল মালেকের স্ত্রী মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে ঘাটাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি একাধিক তদন্তকারী সংস্থা তদন্তের পর সিআইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
টাঙ্গাইল সিআইডির পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান আকন্দ জানান, তারা সরেজমিনে ঘটনার পূর্বাপর তদন্ত শেষে রোববার দুপুরে টাঙ্গাইল শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে হেকমত সিকদারকে গ্রেফতারের পর সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউপি চেয়ারম্যান হেকমত সিকদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বদলি করার হুমকি, কর্মসৃজন প্রকল্পের অতিদরিদ্রদের টাকা আত্মসাৎ, বন বিভাগের জমি দখল করে লেবু ও কলাবাগান, ড্রাগন বাগান তৈরি করা, সংরক্ষিত বনের শাল ও গজারির বাগান কাটা, সরকারি ভূমি দখল করার অভিযোগে স্থানীয়রা বিক্ষোভ-মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। এছাড়া তিনি সাগরদীঘি এলাকার অ্যাডভোকেট ফরহাদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।