প্রকাশিত: জানুয়ারি ১, ২০২৩, ০১:৫৭ এএম
বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার বেতাগী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে রশিদ ছাড়া অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল অনলাইনে প্রকাশ হওয়ার কথা বলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে মোট ৭০০ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৮৪ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, অতিরিক্ত এ টাকা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে গত মঙ্গলবার বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল কার্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ। টাকা নিয়েও আগের পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ করার পর থেকেই বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বেতাগী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষার শুরুর পূর্বে বিদ্যালয়ের বেতন ও পরীক্ষার ফি`র পাশাপাশি প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ফলাফল অনলাইনকরণ ফি বাবদ অতিরিক্ত ১২০ টাকা দিতে হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। তবে এই অতিরিক্ত অর্থের জন্য কোনো রশিদ প্রদান করা হয়নি শিক্ষার্থীদের। তবে তাদের শুধু বেতন ও পরীক্ষার ফি`র রশিদ দেয়া হয়। এছাড়াও বিগত দিনে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির জন্য জরিমানাসহ বিভিন্ন খাত দেখিয়েও অর্থ হাতিয়ে আসছে বলেও জানা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে- পরীক্ষায় নানা জটিলতা ও ফলাফল বিপর্যয়ের আশঙ্কা এবং ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা ভয়ে এর প্রতিবাদ করেন না।
রঞ্জন মল্লিক নামক একজন অভিভাবক বলেন, ‘আমার মেয়ের বার্ষিক পরীক্ষার ফি দেয়ার সময় ফলাফল অনলাইন করার কথা জানিয়ে তারা অতিরিক্ত ১২০ টাকা নিয়েছে। কিন্তু তারা ফলাফল অনলাইনে প্রকাশ করেনি। তাছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানে রশিদ ছাড়া টাকা নেয়ার কথা কখনও শুনিনি।’
রেজাউল কবির জুয়েল নামে আরও এক অভিভাবক জানান, ‘মুই যহন মোর পোলার বার্ষিক পরীক্ষার ফি টাহা দেতে যাই তহন স্কুল কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত টাহার পরেও অতিরিক্ত ১২০ টাহা নেয়। অতিরিক্ত এই টাহা উল্লেখ না করেই হেরা রশিদ দেয়। তারা বলছে হারা বছরের অনলাইন ফি বাবদ প্রত্যেকের কাছ থেকেই এই টাহা নেয়া হয়। তবে এই স্কুল এর আগে কখনও ফলাফল বা অন্য কিছু অনলাইনে প্রকাশ করতে দেখিনি।’
এ বিষয়ে বেতাগী সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়য়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম কবির বলেন, ‘করোনায় পরীক্ষা বন্ধ হবার আগে ফলাফল অনলাইনে হত। সামনে পরীক্ষার ফলাফল ও ভর্তি অনলাইনে চালু করবো। সারা বছরের অনলাইন খরচ হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ১২০ টাকা নেয়া হয়েছে। সরকারিভাবে এর জন্য কোন বরাদ্দ আমরা পাইনা। আমরা পরবর্তীতে এই টাকার জন্য রশিদের ব্যবস্থা চালু করবো।’
বেতাগী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুর রহমান বলেন, ‘ফলাফল অনলাইনে প্রকাশের জন্য টাকা নেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি এই বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুহৃদ সালেহীন বলেন, ‘রশিদ ছাড়া কোন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে টাকা আদায় করা যাবে না। এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এআরআই