প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৫, ২০২২, ০৭:০৮ পিএম
সম্প্রতি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ওয়াজ মাহফিল করতে এসে আলোচিত ইসলামী বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান এবং তার তিন সহকারীকে লাঞ্চিত করার ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় আলোচনা – সমালোচনা। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ত্বহা ও তার তিন সহকারী মাওলানা শায়েক আবদুল আলিম, মাওলানা মোজাহিদ এবং মাওলানা ফিরোজকে ঘিরে রেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এছাড়া ত্বহার ব্যবহৃত মাইক্রোবাসসহ তাদের প্রায় আধা ঘণ্টা অবরুদ্ধ করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে মাওলানা মোজাহিদকে রাস্তায় টেনেহিঁচড়ে মারধর করে বিক্ষুদ্ধ জনতা। এ বিষয়ে মাহফিল আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় গত ৮ নভেম্বর ত্বহা ও তার সহকারী আবদুল আলিমের সঙ্গে মৌখিক চুক্তি হয় ওয়াজ করতে হবে দুই ঘণ্টা। শনিবার বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ত্বহার ওয়াজ করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি পৌনে ৫টায় বক্তব্য শুরু করে সোয়া ৫টায় শেষ করে চলে যাচ্ছিলেন।
তার এমন চলে যাওয়ায় কাটাকাটির একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হন স্থানীয় ব্যক্তিরা। অবরুদ্ধ করে রাখেন ওই ধর্মীয় বক্তাকে। আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, সেখানে ৫০ হাজার টাকা চুক্তিতে প্রধান বক্তা করা হয় ত্বহাকে। গত ৮ নভেম্বর প্রথম দফায় ২০ হাজার টাকা নেন ত্বহার ব্যক্তিগত সহকারী মাওলানা শায়েক আবদুল আলিম। বাকি টাকা ওয়াজ শেষে দেয়ার কথা ছিল।
মাহফিল আয়োজক কমিটির অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেছেন আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান। তিনি জানান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের ওই মাহফিলে আমাকে প্রধান বক্তা রাখা হয়েছে বিষয়টা আমি জানতাম না। আয়োজক কমিটি মাহফিলের দুই দিন আগে এসে আমার হাতে পায়ে ধরে বলে আপনি আমাদের ৩০ মিনিট সময় দেন, এসে শুধু চেহারাটা দেখিয়ে চলে যাবেন। আপনার নাম দিয়ে মাহফিল আয়োজন করেছি আপনি যদি না আসেন জনগণ আমাদের পিটিয়ে শেষ করে দিবে। তাদের অনুরোধে আমি রাজি হয় এবং বলি বগুড়া আমার মহফিল আছে সেখানে যাওয়ার পথে আপনাদের ওখানে একটু সময় দিবো।
আবু ত্বহা বলেন, আমরা বিকেল ৪টায় মাহফিল স্থলে উপস্থিত হয়। বাদ মাগরিব বক্তব্য শুরু করার জন্য আমাদের বলা হয়েছিলো। কিন্তু সেখানে গিয়ে শুনি ভিন্ন কথা, তারা বিকেল তিনটায় মাহফিল শুরু হবে বলে প্রচার করেছে। আমাদের পরিকল্পনা ছিলো বিকেলে মাহফিল স্থলে পোঁছালাম তারপর একটু রেস্ট নিয়ে আলোচনা শুরু করবো। কিন্তু সেটা হলোনা, তাড়াহুড়ো করে স্টেজে ওঠালো। তারপর অনলাইন বিভিন্ন মিথ্যা কথা প্রচার করছে।
ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত দাবি করে ত্বহা বলেন, সেদিন আমার সাথে ৮-১০ জন ইউটিউবার ছিলো কিন্তু কাউকে ক্যামেরা সেট করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের দুজন ক্যামেরাম্যানকে গলাই ছুরি ধরে বলেছে ক্যামেরা ফিট করা যাবেনা। এছাড়াও ক্যামেরা ভাংচুর করা হয়। তিনি বলেন, সেখানে একটি ছেলে রাজনৈতিক সেল্টারে ক্যাডার বাহিনী নিয়ে স্টেজে এসে আমাদের সাথে খুব বাজে আচরণ করছে। সে বার বার বলছিলো আপনাদের টাকা দিয়ে ভাড়া করে নিয়ে এসেছি, আরও দুই ঘন্টা আলোচনা করতে হবে। কিন্তু আমি এই মাহফিলের বিষয়ে কোনো টাকা নেয়নি, যাকে টাকা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে তাকে আমি চিনিও না।
তিনি বলেন, মাহফিলের স্রোতারা আমাদের পক্ষে ছিলো। তারা আমাদের নিরাপদে গাড়ীতে তুলে দিয়েছে। মাহফিল আয়োজন কিমিটি সেদিন আমাদের ক্যামেরাম্যানকে পিটিয়েছে, ৩৬ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে, সবাইকে ঘরে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। কিন্তু এই ঘটনায় পরে আমরা দেখলাম দেশের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম নিউজ করেছে। মার খেলাম আমরা কিন্তু আমাদের বক্তব্য না নিয়ে আয়োজক কমিটির বক্তব্য নিয়ে নিউজ প্রচার করলো তারা। আমাদের বক্তব্য নিলো না। ওয়াজ মাহফিলকে বিতর্কিত করতেই এই হলুদ সাংবাদিকতা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনান।