প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২২, ০৩:২২ এএম
মামলা না থাকলেও তিন জেলার আদালত থেকে আসা অপহরণ ও হত্যা মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে ঘুরছেন রংপুরের এক সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীসহ সাত কর্মী। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে পুলিশ কমিশনারের দফতরে আবেদন দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীদের একজন রংপুর সিটি করপোরেশন দুই নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বর্তমানে সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী গোলাম সরওয়ার মির্জা জানান, সম্প্রতি পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে তিনি এবং তার কর্মী অহেদুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, ওলিউল্লাহ চাঁদ ও ফরিদুল ইসলামের নামে অপহরণ মামলার একটি গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ আসে রংপুর মেট্রোপলিটন হাজির হাট থানায়। এ ছাড়া ভোলা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে একই ব্যক্তিদের নামে হত্যা মামলার একটি গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ আসে হাজির হাট থানায়।
তিনি আরও জানান, সপ্তাহখানেক আগেও হাজির হাট থানায় টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে রাজনৈতিক কর্মী হিরণ চন্দ্র রায়ের নামে পৃথক আরেকটি হত্যা মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ আসে।
গোলাম সরওয়ার মির্জা বলেন, ‘গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়টি জানতে পেরে সংশ্লিষ্ট তিন আদালতে সরেজমিন খোঁজ নিয়েছি, কিন্তু আমাদের কারোর বিরুদ্ধেই এমন কোনো তথ্য নেই আদালতে। এ সংক্রান্ত কোনো মামলার অস্তিত্বও নেই।’
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এমন ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আসন্ন রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই নম্বর ওয়ার্ড থেকে আমি একজন কাউন্সিলর প্রার্থী। আগামী ২৯ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন হওয়ায় মামলা সংক্রান্ত ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। যেন মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আমি বাদ পড়ে যাই মামলার কারণে। আমার ধারণা, প্রতিদ্বন্দ্বীদের কেউ এমন ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা বানিয়ে আমাদের হয়রানি করতে এসব করছেন। এ বিষয়ে পরিত্রাণ চেয়ে পুলিশ কমিশনার বরাবর আমরা একটি আবেদন দিয়েছি। আশা করছি পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করে সমাধান করবে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
কর্মী হিরণ চন্দ্র রায় বলেন, ‘গ্রেফতারি পরোয়ানার কারণে আতঙ্কে ঘরছাড়া আছি। আমি ছোট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ করে সংসার চালাই। এখন কাজেও যেতে পারছি না। দুদিন বাড়িতে গিয়ে পুলিশ খুঁজে এসেছে। পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছি যেন ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানার বিষয়ে তিনি দায়িত্ব নিয়ে দুর্ভোগ থেকে আমাদের মুক্তির ব্যবস্থা করেন।’
মহানগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, ‘আদালতের সিল-স্বাক্ষরযুক্ত গ্রেফতারি পরোয়ানার কাগজপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট আদালতে যোগাযোগ করে জানা যাবে এসব গ্রেফতারি পরোয়ানা ভুয়া নাকি সত্য। কেউ যদি হয়রানির উদ্দেশ্যে এসব ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা বানিয়ে থাকেন, তাহলে কীভাবে বানালেন, কোন উদ্দেশ্যে বানিয়েছেন, থানায় কীভাবে পৌঁছালেন–এসব খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এসএই