• ঢাকা রবিবার
    ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বাঁচতে চায় থেলাসেমিয়ায় আক্রান্ত ২ ভাই

প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২২, ০৭:১১ পিএম

বাঁচতে চায় থেলাসেমিয়ায় আক্রান্ত ২ ভাই

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বাঁচতে চায় থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত এক পরিবারের দুই সন্তান। আর্থিক সঙ্গতি নেই তাই সহযোগিতা চায় ভাগ্যাহত পিতা হরিজন সম্প্রদায়ের কার্তিক কুমার দাস। 

তিনি একজন সঙ্গীত-পাগল মানুষ। ২ ছেলে ১ মেয়ে ও স্ত্রীসহ তার ৫ জনের সংসারে তিনিই একমাত্র কর্মক্ষম। উপজেলার মাদারগঞ্জ বাজারে ছোট্ট একটি মেকানিকের দোকান দিয়ে প্রতিদিন আয় করেন ২ থেকে ৩শ’ টাকা। এই সামান্য আয়ে অতি কষ্টে চলে সংসার। ২০১৬ সালে বড় ছেলে সাগর দাস (১৮) থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হলে পরিবার ও মন থেকে উড়ে যায় শান্তি। 

এর ৬ মাস পরে ছোট ছেলে শাওন দাসও (১২) আক্রান্ত হয় একই রোগে। কর্য, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে শুরু করেন ছেলেদের চিকিৎসা। দূরারোগ্য ব্যাধি থেলাসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বেঁচে আছেন অন্যের রক্তের উপর ভরসা করে। প্রতি মাসে ২-৩ ব্যাগ রক্ত পুশ করতে হয় সাগরের শরীরে। এরপরও বাজার পরিষ্কার করে সেখান থেকে সামান্য টাকা আয় করে বাবাকে সহযোগিতা করে সে। অপরদিকে ছোট ছেলে শাওন কুমার দাসের (১২) অবস্থা আসঙ্কাজনক। 

প্লীহা বেড়ে পেট ফেঁপে রয়েছে। তার শরীরে ঢোকাতে হয় মাসে ৪-৫ ব্যাগ রক্ত। প্রতি মাসে এভাবে রক্ত জোগাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে পরিবার। এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অনেকটা কেঁদেই ফেলেন মা ঝুনি রানী দাস ও বাবা কার্তিক কুমার দাস। তারা জানান, দুই ছেলের এই কঠিন রোগের কারণে আতঙ্কে থাকেন প্রতিনিয়ত। নির্ঘুম রাত কাটে তাদের। রক্তের খোঁজে সব সময় বেগ পেতে হয়। 

এ ছাড়া ছেলেদের রক্ত ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রতি মাসে ব্যয় হয় হাজার হাজার টাকা। তাদের চিকিৎসায় ইতোমধ্যে বাবার সখের হারমনিয়াম, তবলা, মায়ের গহনাসহ সব সম্পদ বিক্রি করে এখন নিঃস্ব। একদিকে সন্তানদের চিকিৎসার ব্যয় অপরদিকে সংসারের খরচ জোগানো কঠিন হয়ে পড়েছে তাদের। 

এদিকে ছোট ছেলে শাওনের দ্রুত অপারেশন করার পরামর্শ দিয়েছেন রংপুর মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. বিমল বিশ্বাস। যাতে ব্যয় হবে কয়েক লাখ টাকা। যা তার পরিবারের জন্য জোগাড় করা অসম্ভব। 

এ জন্য সমাজের বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তিসহ সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছেন বাবা-মা। বল্লভের খাস ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বিষয়টি অবগত আছি। পরিবারটি খুবই অসহায়। তবে দেশের বিত্তবান ও দানশীল ব্যক্তিসহ সরকারি বেসরকারি সহযোগিতার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’ 

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. জামাল উদ্দিন বলেন, আমরা সমাজেবা অধিদফতর থেকে থেলাসেমিয়া রোগের জন্য যে আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হয় তার জন্য আবেদন করতে বলেছি। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করলে দুই ভাইকে সহযোগিতা করা হবে।

 

এএল/

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ