• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সৈয়দপুরে গম সংকটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিল

প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২২, ০৮:৫৩ পিএম

সৈয়দপুরে গম সংকটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে মিল

নীলফামারী প্রতিনিধি

নীলফামারীর সৈয়দপুরে গমের সংকটে আটা-ময়দা উৎপাদনের অধিকাংশ মিল বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি মিলগুলো শ্রমিক-কর্মচারী ও বাজার ধরে রাখতে ভর্তুকি দিয়ে চালু রাখা হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে এগুলোও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মিলমালিকের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিসিক শিল্পনগরীসহ বিভিন্ন এলাকায় ১৭টি আটা-ময়দার মিল আছে। এসব মিলে প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ টন চাহিদার বিপরীতে ১০ থেকে ১৫ টন গম সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে ১০ জন মালিক তাদের মিল বন্ধ করে দিয়েছেন। এসব মিল থেকে উৎপাদিত আটা ও ময়দা স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আশপাশের জেলাগুলোতেও সরবরাহ করা হতো। এ ছাড়া উপজাত হিসেবে গমের যে ২২ শতাংশ ভুসি পাওয়া যায়, সেটি স্থানীয় গো-খাদ্যের চাহিদা মেটাত।
তারা জানান, মিল বন্ধ ও উৎপাদন কমে যাওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে আটা-ময়দা ও ভুসির খুচরা ও পাইকারি বাজারে। অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে এসব পণ্যের দাম। সেই সঙ্গে মিলের প্রায় ৩৫০ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।
মিলমালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে গম আমদানি বন্ধ থাকায় সংকট তৈরি হয়েছে। এখন ভারত থেকে গম বেশি দামে আমদানি করতে হচ্ছে। তা-ও চাহিদামতো পাওয়া যাচ্ছে না। তবে ভারত থেকে গমের ভুসি আমদানি চলছে। এতে মিলাররা আরও বিপাকে পড়েছেন। সৈয়দপুরের মিলগুলোতে আগে ৩৭ কেজির এক বস্তা ভুসি বিক্রি হতো ১ হাজার ৮০০ টাকায়। এখন ভারত থেকে আমদানি করা ভুসি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকায়। তাই স্থানীয় মিলের ভুসি কেউ কিনছেন না।
শহরের গাউসিয়া মেজর অটোমেটিক ফ্লাওয়ার মিলের মালিক মো. মোস্তফা জানান, এখন একমাত্র ভরসা ভারতের গম। তবে সেখান থেকে বেশি দামে আমদানি করতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রতি টন গমের ক্রয়মূল্য পড়ছে ৫০ হাজার টাকা, যা কোনোভাবেই লাভজনক নয়।
বিসিক শিল্পমালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বলেন, চাহিদামতো গম পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিদিন ৩০ টন চাহিদার বিপরীতে ১০ টন গম দিয়ে আটা-ময়দা তৈরি করতে হচ্ছে। বাজার ও কারিগর ধরে রাখতে লোকসান গুনতে হচ্ছে। গমের সংকট না কাটলে মিল বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতার কারণে বিভিন্ন দেশে গমের সংকট রয়েছে। সৈয়দপুরে যে মিলগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সেগুলো প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান। গমের সংকটের কারণেই হয়তো তারা উৎপাদন বন্ধ রেখেছে। তবে সরকারিভাবে খোলা বাজারে আটা বিক্রি অব্যাহত আছে। এ জন্য খাদ্য বিভাগের সঙ্গে স্থানীয় যে মিলগুলো চুক্তিবদ্ধ রয়েছে সেগুলোতে গম সরবরাহ করে আটা-ময়দা তৈরি করে নেয়া হচ্ছে।

এএল/

আর্কাইভ