প্রকাশিত: নভেম্বর ৪, ২০২২, ০৮:২২ পিএম
মোবাইল ফোন চুরির প্রতিবাদ করায় নড়াইল সদর উপজেলার মাইজপাড়া ইউনিয়নের কালুখালী গ্রামের সাধন কির্ত্তনীয়াকে (৪৬) কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করে বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। এ মামলা তুলে নেয়ার জন্য নানা ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এ কারণে ভুক্তভোগীরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছেন না।
মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রায় দেড় মাস আগে নড়াইলের কালুখালী গ্রামের অসিম প্রামানিকের ছেলে অমিত (২২) প্রতিবেশী তুষার বিশ্বাসের ঘর থেকে মোবাইল ফোন চুরি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এরপর গ্রাম্য সালিশ-বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, চুরি করা মোবাইল ফোন এক মাসের মধ্যে ফেরত দিবেন অভিযুক্ত অমিত প্রামানিক। এ সিদ্ধান্তের পর প্রায় দেড় মাস অতিবাহিত হলেও মোবাইল ফোন ফেরত দেননি অমিতসহ তার পরিবার।
নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তুষার বিশ্বাসের শ্বশুর কালুখালী গ্রামের সাধন কির্ত্তনীয়া চুরি হওয়া মোবাইল ফোন ফেরত চান। এ নিয়ে অমিত প্রামানিক ও সাধন কির্ত্তনীয়ার পরিবারের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
এরপর গত ২৭ অক্টোবর সকাল ৮টার দিকে সাধন কির্ত্তনীয়া কালুখালী গ্রামের মিলনের চায়ের দোকানের কাছে পৌঁছালে প্রতিপক্ষের লোকজন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে লাঠি, রড ও রামদা দিয়ে সাধন কির্ত্তনীয়ার মাথা, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় এক সপ্তাহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ভুক্তভোগী সাধন কির্ত্তনীয়া। তার মাথায় ১৬টি সেলাই দিতে হয়েছে। যে ক্ষত এখনো ঠিক হয়নি।
এদিকে, সাধন কির্ত্তনীয়াকে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় গত ১ নভেম্বর নড়াইল সদর থানায় অমিত প্রামানিকসহ ১২ জনের নামে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগীর (সাধন) ভাইপো মিন্টু কির্ত্তনীয়া। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে ৯ নম্বর আসামি সম্রাট প্রামানিককে (২০) গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপরই মামলার বাদী মিন্টু কির্ত্তনীয়া, ভুক্তভোগী সাধনসহ তাদের পরিবারকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছেন আসামিরা।
এ অভিযোগ করে মামলার বাদী মিন্টু বলেন, মামলা তুলে নেয়ার জন্য আসামিরা আমাদের নানা ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। আমাদের বাড়ি থেকে হাটবাজারসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসামিপক্ষের বাড়ির সামনে দিয়ে যেতে হয়। তারা হুমকি দিচ্ছে, আমরা ঘর থেকে বের হলে তাদের বাড়ির সামনে আমাদের আবারো মারধর করবে। আমরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছি না।
অন্যদিকে, আসামি অমিত প্রামানিকের বিরুদ্ধে এর আগেও গ্রামের অন্তত পাঁচটি মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মাদক সেবনসহ বেচাকেনারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় ভুক্তভোগীরা অমিত প্রামানিককে গ্রেফতারসহ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে নড়াইল সদর থানার ওসি মাহমুদুর রহমান বলেন, সাধন কির্ত্তনীয়াকে মারধরের অভিযোগে ১২ জনের নামে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে সম্রাট প্রামানিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আর বাদীসহ ভুক্তভোগীর পরিবারকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এএল/