প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২২, ০৯:৪৪ পিএম
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরে পবিত্র কথিত কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে সহিদুন্নবী জুয়েল নামে এক শিক্ষককে পিটিয়ে-পুড়িয়ে হত্যার দুই বছরেও শুরু হয়নি মামলার বিচার কার্যক্রম। আলোচিত ওই হত্যাকাণ্ডে তিন মামলায় গ্রেফতার অধিকাংশ আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসেছেন । এ নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে জুয়েলের পরিবার।
২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর ওই এলাকায় কথিত কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যার পর বুড়িমারী লালমনিরহাট মহাসড়কে মরদেহ পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রিপাড়ার আবু ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের গ্রন্থাগারিক ছিলেন। এ ঘটনায় পর দিন শুক্রবার জুয়েলের চাচাতো ভাই সাইফুল আমিন বিপ্লব একটি হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ভাঙচুরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান আবু নেওয়াজ নিশাত একটি এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় উপ-পরিদর্শক শাজাহান বাদী হয়ে পাটগ্রাম থানায় অপর মামলাটি করেন। তিন মামলায় আসামি করা হয় ১১৪ জনকে। পরে পুলিশ এজাহারনামীয় এবং তদন্তে পাওয়া ১৩৪ আসামিকে গ্রেফতার করে। তাদের মধ্যে ১২১ জনই হাইকোর্ট থেকে জামিনে রয়েছেন। কারাগারে আছেন মাত্র একজন।
রংপুরে এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে বসবাস করা জুয়েলের স্ত্রী জেসমিন বলেন, দুই বছরেও বিচার শুরু হয়নি। কবে শুরু হবে তাও জানি না।
তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী নিরপরাধ ছিলেন। রংপুর থেকে বুড়িমারীতে কাজে গিয়ে নামাজ পড়তে বুড়িমারী জামে মসজিদে গিয়েছিলেন। নামাজ শেষে সেখানে কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে তাকে পিটিয়ে এবং পরে রাস্তায় এনে শরীরে পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আমি স্বামী হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
পাটগ্রাম কোর্টের জিআরও এএসআই জাহিদ হোসেন জানান, তিনটি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। এসব মামলায় এক আসামি কারাগারে এবং ছয়জন পলাতক। বাকি আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আকমল হোসেন আহমেদ বলেন, এখনো ছয় আসামি পলাতক। তাদের বিষয়ে সর্বশেষ প্রক্রিয়া হলো হুলিয়া জারি করা। এসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে গিয়ে বিচার এখনো শুরু হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিচার কাজ শুরু হবে বলে জানান আইনজীবী আকমল হোসেন আহমেদ।
এএল/