প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২২, ০৬:১৫ এএম
কুষ্টিয়ায় বছরের পর বছর ধরে লাইসেন্স (নিবন্ধন) নবায়ন ছাড়াই সার উত্তোলন করে আসছিলেন বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশেনের (বিসিআইসি) দুই ডিলার। খামারবাড়ি ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে আড়ালে এই কাজ চলছিল।
চলতি মাসে বিষয়টি জানতে পারেন কুষ্টিয়া খামারবাড়ির উপ-পরিচালক ড. হায়াত মাহমুদ। তিনি দুই ডিলােদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি ইস্যু করেন গত রবিবার। সোমবার জেলা সার, বীজ ও মনিটরিং কমিটির সভায় এ নিয়ে আলোচনার পর গঠন করা হয়েছে তদন্ত কমিটি।
অভিযুক্ত দুই ডিলার হলেন- সদর উপজেলার হরিনারায়ণপুর বাজারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মেসার্স হাসান অ্যান্ড কোং-এর হাসান ও মিরপুরের প্রতিষ্ঠান মেসার্স জাকির হোসেন-এর জাকির। এর মধ্যে হাসান প্রায় এক যুগ লাইসেন্স নবায়ন করেননি এবং জাকিরের লাইসেন্স বছরখানেক আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়।
বিষয়টি স্বীকার করে জাকির হোসেন বলেন, লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তিনি জানতেন। ব্যাংকে অর্থ জমা দিয়ে নতুন করে আবেদন করেন অফিসে। তবে অফিস থেকে কিছু জানায়নি। অপর ডিলার হাসানের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুষ্টিয়া কার্যালয় থেকে চিঠি ইস্যুর পর সার বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক হইচই হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলাম। বিসিআইসি ডিলাররা অভিযুক্ত দুই ডিলারের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। তবে আপত্তি জানান সভার অন্য সদস্যরা। তারা দুই ডিলারের নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানালে জেলা প্রশাসক তদন্ত টিম গঠন করে দেন। তদন্ত প্রতিবেদন আসার পর এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন তিনি।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রতি দুই বছর অন্তর খামারবাড়ি থেকে ডিলারদের লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। সার তুলতে হলে লাইসেন্সের কপি জমা দেয়া লাগে। তা না হলে সার উত্তোলন করতে পারেন না ডিলাররা। নিয়ম আছে, লাইসেন্স পাওয়ার পর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তা পরীক্ষা করে স্বাক্ষর করবেন।
কিন্তু দীর্ঘদিন নিবন্ধন ছাড়াই ওই দুই ডিলার সার উত্তোলন করে আসছেন। অভিযোগ উঠেছে, পুরোনো লাইসেন্সে তারিখ ঘষামাজা করে ফটোকপি করে ডিপোতে জমা দিয়ে তারা সার তুলতেন। ড. হায়াত মাহমুদের নজরে আসার পর তিনি তাদের সার উত্তোলন সাময়িক বন্ধ করে দেন।
বিসিআইসি সার ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী বলেন, অনিয়ম হলে পরে ব্যবস্থা নেয়া হবে। খামারবাড়ির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. হায়াত মাহমুদ বলেন, লাইসেন্স ছাড়া সার উত্তোলনের নিয়ম নেই। দীর্ঘ সময় ধরে লাইসেন্স হালনাগাদ না করাও অপরাধ। এরপরও তারা কীভাবে সার উত্তোলন করলেন তা খতিয়ে দেখা হবে।
জেলা প্রশাসক মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখবে কৃষি দফতর। তাদের মতামত নিয়ে ডিলারদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসএই/এএল