প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২২, ০২:৪৮ এএম
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর বিসিক বাসস্ট্যান্ড থেকে কাশিনাথপুর যাওয়ার রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় কার্পেটিং উঠে গিয়ে আলাদা হয়ে গেছে ইটের খোয়া। কোথাও কোথাও রাস্তার দু’পাশ থেকে ভেঙে সামান্য চান্দি টিকলেও বেশির ভাগ জায়গায় পুরো কার্পেটিং উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় খানাখন্দ।
একদিকে সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব খানাখন্দে পানি জমে ছোটখাটো ডোবার রূপ ধারণ করে অপরদিকে রৌদ্রজ্জ্বল দিনে এসব খানাখন্দ পথচারীদের দুর্ঘটনার ফাঁদ হয়ে ওঠে।এমন মরণফাঁদ হয়ে ওঠা রাস্তাটি হলো- উপজেলার পৌর সদরের শক্তিপুর তেলপাম্প থেকে বাড়াবিল উত্তরপাড়া হয়ে কায়েমপুর ইউনিয়নের কাশিনাথপুর বাজার পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সংযোগ সড়কের চিত্র।
অথচ এই ১০ গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষের রাত পৌহালেই উপজেলা পরিষদ, আদালতসহ হাটে-বাজারে যাওয়া বা মহাসড়কে ওঠা এবং কৃষকের উৎপাদিত পণ্য পরিবহনসহ শিক্ষার্থীদের স্কুল-কলেজে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। গ্রাম গুলি হলো- পৌর এলাকার শক্তিপুর, নলুয়া, বাড়াবিল, কায়েমপুর ইউনিয়নের কায়েমপুর, চিথুলিয়া, বনগ্রাম, কাশিনাথপুর, চরআঙ্গারু, সরূপপুর ও সড়াতৈল। কিন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, নির্মাণের পর থেকে সংশ্লিষ্টদের কেউই এই সড়কের দিকে নজর দেননি। আর এই নজর না দেওয়ার কারণে ১০ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কটিতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় ওই সড়কটির অনেক স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।পাকা রাস্তার ইট বালি আলাদা হয়ে আগের কাঁচা রাস্তার মাটিও বের হয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে সড়কের কার্পেটিং উঠে ইটের খোয়া বের হয়ে গেছে।কোথাও কোথাও বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।একটু বৃষ্টি হলে এ সব গর্তে কাঁদাপানি জমে।সড়কে একটি গাড়ি আরেকটিকে অতিক্রম করতে পারছে না।হেলে দুলে চলছে রিক্সা ভ্যানসহ অন্যান্য যানবাহন।
এ বিষয়ে চর আঙ্গারু গ্রামের আব্দুস সালাম, ভ্যান চালক বরাত আলী, হাঁসের খামারী আসমত আলী, শিক্ষার্থী আনন্দ শরীফ ও চিথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলামসহ এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ভারি বর্ষণের কারণে সড়কটির বিভিন্ন স্থানের পিচ, ইট, পাথর ও খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
এ গর্তের মধ্যে চাকা আটকে প্রায়ই রিক্সা-ভ্যান উল্টে মানুষজন আহত হয় ও মালামাল নষ্ট হয়ে যায়। রিক্সা-ভ্যান ভেঙ্গে মালিকের হচ্ছে চরম ক্ষতি।বিশেষ করে প্রায়ই দুধ বহণকারী ভ্যান উল্টে পানিতে দুধ পড়ে যায়।এতে চরম ক্ষতির মুখে প্রায়ই পড়ছে স্থানীয় খামারিরা।সড়কটি ভাঙ্গার কারণে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে কষ্ট হয়।তারা অবিলম্বে সড়কটি সংস্কারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এবিষয়ে কায়েমপুর কয়েমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ জিয়াউল আলম(ঝুনু)বলেন,রাস্তাটির অবস্থা খারপ দেখে আমি মৌখিক ভাবে ইউএনও এবং এলজিডি’তে বারংবার বলেও কাজ না হওয়ায় আমি আমার নিজ অর্থায়নে বর্ষার আগের সড়কের খানাখন্দে ইট,সুরকি ও বালি দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু বর্ষা মাসে বৃষ্টিতে সড়কটি আরও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেছে। প্রায় ২০ হাজার মানুষের চলাচলের সড়কটি অতিদ্রুত সংস্কারের জন্য উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, এলজিডির আওতাভূক্ত ৩.৮৫০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ২ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে সম্পূর্ন সড়ক মেরামত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন জানান, জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে অতিদ্রুত সড়কটি মেরামতের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসএই/এএল