প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২২, ০৩:৪৫ এএম
২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ মধ্যরাত থেকে সমুদ্রে মাছ শিকারে যাওয়ার কথা ছিল সমুদ্রগামী জেলেদের। তাই ৪-৫ দিন আগে থেকেই প্রস্ততি নিয়ে রেখেছিল বরগুনার পাথরঘাটা মৎস অবতরন কেন্দ্রের মাছধরার ট্রলারগুলো। কিন্তু হঠাৎ সমুদ্রে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে জেলেদের৷ কারণ ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে লাগাতার লোডশেডিং এ চরম বরফ সঙ্কট এখানে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে ২২ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ চলে যায় পাথরঘাটায়। ঝড়ো আবহাওয়া কেটে গেলে বুধবার (২৬ অক্টোবর ) বিকেলে বিদ্যুৎ আসে কিন্ত বিদ্যুৎ আসলেও কিছুক্ষণ পরপর লোডশেডিং হচ্ছে। যার কারনে বরফকল গুলে চালু হলেও কাঙ্ক্ষিত বরফ উৎপাদন করতে পারছে না। কারন কারখানায় প্রথম বরফ তৈরী হতে ১ দিন থেকে ৩ দিন সময় লাগে। অথচ নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আজ রাতে। তবুও বরফ না থাকায় সাগরে যাত্রা করতে পারছেনা সমুদ্রগামী জেলেরা।
জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং দেশের উপকূল অতিক্রম করে ২৪ অক্টোবর রাতে। এর প্রভাবে ২-৩ দিন আগে থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল পাথরঘাটায়। ফলে বন্ধ ছিলো পাথরঘাটা মৎস্য অবতরন কেন্দ্রের সব বরফকল। তাই বরফ তৈরী হয়নি এখানের বরফকল গুলোতে এদিকে পর্যাপ্ত বরফ মজুদ না করে সাগরেও যেতে পারবে না জেলেরা।
রফিক, সোহেল, হারুন মৃধা পাথরঘাটা মৎস্য অবতরন কেন্দ্রের কয়েকজন জেলে বলেন, নিষেধাজ্ঞা একের পর এক থাকেই। এই ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ রাতে, তবুও আমাদের মধ্যে আমেজ নেই। কারন কোথাও (উপজেলাজুড়ে) বরফ নেই। বরফ না নিয়ে সাগরেও যেতে পারছিনা। ঘূর্ণিঝড়ের কারনে ১ সপ্তাহ কারেন্ট ছিলনা। তাই মিলে বরফ হয়নি। গতকাল কারেন্ট আসছে। বরফ তৈরী হতে ১ থেকে ৩ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। আমরা ভীষণ অসহায় হয়ে পড়লাম।
পাথরঘাটা আইস ফ্যাক্টরীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আউয়ালুর রাশেদ সবুজ বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর কারনে বৈরী আবহাওয়া ছিল উপকুলবর্তী পাথরঘাটা উপজেলায়। যে কারনে সিত্রাং এর প্রভাব শুরুর দিক থেকেই বিদ্যুৎ ছিল না এখানে। কালকে বিদ্যুৎ আসার সঙ্গে সঙ্গেই মিলে কাজ শুরু হয়ে গেছে। এখনও বিদ্যুৎ ঘনঘন লোডশেডিং হচ্ছে। আমাদের বরফ না থাকায় জেলেদের দিতে পারছিনা। যে কারনে বরফ বের হতে ২-৩ দিন সময় লাগবে।
জেলা মৎসজীবি ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আজ জেলেদের সাগরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে বিদ্যুৎ ছিলনা গোটা উপজেলায়। তাই বরফের হাহাকার লেগে গেছে। বরফ হতে আরও ২-৩ দিন সময় লাগবে। তারপর বরফ নিয়ে সাগরে রওয়ানা করবে জেলেরা। একর পর এক নিষেধাজ্ঞা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। তার মধ্যে এবার বরফ সঙ্কট দেখা দিল।
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব বলেন, দেশে ইলিশের পরিমাণ বাড়াতে অসাধু জেলেদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার সুফলতা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতেও কাজ করছি। মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলাকালে জেলায় ৩৭ হাজার ৭০ জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। সাগরে যাতে জেলেরা নির্বিঘ্নে মাছ শিকার করতে পারে এ জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশের জলসীমায় ভিনদেশি জেলেদের প্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে থাকবে প্রশাসন।
এসএই