প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২২, ০৫:২৫ পিএম
গাইবান্ধার বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে অবাধে চলছে অতিথি পাখি শিকার। জেলার বিভিন্ন উপজেলার খাল বিল জলাশয় থেকে সংঘবদ্ধ শিকারী চক্র ফাঁদে ফেলে প্রতিদিন শিকার করছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। ফাঁদ পেতে অবাধে পাখি ধরলেও নীরবে আছেন বন বিভাগ।
জেলার বিলাঞ্চল হিসেবে পরিচিত সদর উপজেলার ‘দারিয়াপুর`। এ অঞ্চলে কুমারগাড়ী, পাখিমারী, শৌলমাড়ী ও বাঘমাড়া বিলসহ আরও বেশ কিছু খাল-বিল রয়েছে। প্রতিবছরের এই সময়ে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে শুরু করে দেশীয় জাতের অতিথি পাখি। ঠিক এ বছরেও পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠছে এই এলাকাটি। এরই মধ্যে এসব পাখি নিধন করতে ব্যস্ত পেশাদার শিকারীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, দারিয়াপুরের বিলগুলোতে পাখির ঝাঁকের নয়নাভিরাম দৃশ্য সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এখানে আশ্রয় নিয়েছে শত শত সাদা বক ও পানকৌড়ি। আর কতিপয় মানুষ লাঠি হাতে পাখিগুলোকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তাড়া খেয়ে জালে ও ফাঁদে পড়লে পাখিগুলোকে খাঁচায় আটকানো হচ্ছে।
এদিকে, জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, গোবিন্দগঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলার নদীর তীর ও খাল বিলেও পাখি নিধন শুরু করেছে শিকারীরা।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবছরের অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ওইসব বিলে পানকৌড়ি ও সাদা বকসহ আরও অসংখ্য অতিথি পাখি ছুটে আসে। পুরো শীতকাল অবস্থান করে। পাখির কিচির-মিচির শব্দে আনন্দঘন পরিবেশকে করে তোলে প্রাণবন্ত। আবার শীতের তীব্রতা কিছুটা কমে গেলে পাখিগুলো পূর্বের স্থানে ফিরে যায়। এই পাখির আগমনকে ঘিরে স্থানীয় শিকারীরা মাঠে নেমে মেতে উঠে নিধনের মহোৎসবে।
খবির আলী নামের এক বাসিন্দা বলেন, `পরিবেশ রক্ষায় পাখির ভূমিকা অপরিসীম। এই এলাকায় অবাধে পাখি শিকার করলেও অদ্যবদি ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বন বিভাগ।`
জামাল উদ্দিন নামের এক সমাজকর্মী বলেন, `শীতকাল আসলেই অতিথি পাখি নিধনের মহোৎসব শুরু হয়। বন বিভাগকে বলেও কোনো প্রতিকার হয় না।`
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিকারী বলেন, `জীবিকার তাগিদে অনেক দিন থেকে পাখি ধরি। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় এসব পাখির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রকার ভেদে প্রতিটি পাখি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা দামে বিক্রি করা হয়।`
গাইবান্ধা বন বিভাগের কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, `পাখি নিধনের ব্যাপারে জেল-জরিমানার বিধান রয়েছে। ওই এলাকায় পাখি শিকারের বিষয়টি তার জানা নেই। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।`
এএস/এএল