• ঢাকা সোমবার
    ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

স্ত্রী থেকে ‘বোন’ হওয়া সেই গৃহবধূ আটক

প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২২, ০৭:০০ পিএম

স্ত্রী থেকে ‘বোন’ হওয়া সেই গৃহবধূ আটক

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

এনআইডি জা‌লিয়া‌তি করে শ্বশুর শাশু‌ড়িকে নিজের পিতা-মাতা বানানো সেই গৃহবধূ সোনালী খাতুন আদালতে হলফনামা করে নাম প‌রিবর্তন করতে গিয়ে আটক হয়েছেন। সোমবার (১০ অ‌ক্টোবর) কু‌ড়িগ্রাম চিফ জু‌ডি‌সিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মজনু মিয়ার আদালতে হলফনামা করতে যান তিনি। এ সময় ভুল ও মিথ্যা তথ্য ‌দিয়ে হলফনামা করার চেষ্টার অপরাধে তাকে পু‌লিশের নিকট সোপর্দ করে আদালত।

এ ঘটনায় আদালতের বেঞ্চ সহকারী লিয়াকত আলী বাদী হয়ে রাতেই গৃহবধূসহ ৩ জনকে আসামি করে কু‌ড়িগ্রাম সদর থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন। আসামিরা হলেন- মুক্তিযোদ্ধা আইনুল হকের বড় ছেলে আনিছুর রহমানের স্ত্রী সোনালী খাতুন, নাগেশ্বরী উপজেলার স‌ন্তোষপুর ইউপি চেয়ারম্যান ‌লিয়াকত আলী লাকু এবং উলিপুর পৌরসভার নিকাহ রে‌জিস্ট্রার (কা‌জী) নুরুল হুদা।

এর আগে গৃহবধূ সোনালীর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার কোটা সু‌বিধা নেবার উদ্দেশ্যে নিজের শ্বশুর মু‌ক্তিযোদ্ধা আইনুল হক, শাশুড়ি জমিলা বেগমকে নিজের পিতা-মাতা বানিয়ে উপজেলার সাপখাওয়া দাখিল মাদরাসা ২০১০-১১ সালে অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে ভর্তি হন এবং ২০১৩ সালে এসএসসি পাস করেন। পরে ২০১৪ সালে ভোটার হালনাগাদ করার সময় তিনি সেই এসএসসি সনদ দিয়ে ভোটার হন।

সোনালী খাতুন স‌ন্তোষপুর ইউ‌নিয়নের কু‌টি নাওডাঙা আমিরটারী তালেবেরহাট গ্রামের বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা দম্পতির বড় ছেলে আনিছুর রহমানের স্ত্রী। সে রংপুর বেতারে ২০১২ সাল থেকে অফিস সহায়ক পদে চাকরি করছেন। তার উলিপুর উপজেলার গুনাইগাছ ইউনিয়নের নাগড়াকুড়া বাজার এলাকার মৃত রবিউল ইসলাম-আছমা বেগম দম্পতির ছোট মেয়ে সোনালী খাতুনের ২০০৭ সালে বিয়ে হয়। আনিছুর রহমান-সোনালী খাতুনের সংসারে জমজ শিশুসহ ৩ জন সন্তান রয়েছে।

আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে অ‌ভিযুক্ত গৃহবধূ সোনালী নিজের ও তার শ্বশুর শাশু‌ড়ির নাম প‌রিবর্তন ক‌রে তার প্রকৃত পিতা- মাতার নাম দিয়ে হলফনামা করতে যান। তার দা‌খিলকৃত কাগজপত্রে তি‌নি নাম ও জন্ম তা‌রিখ ১৯৯৪ সা‌ল প‌রিবর্তন করে নতুন জন্ম তা‌রিখ ১৯৯০ সাল দে‌খিয়ে ঢাকা দ‌ক্ষিণ সি‌টি ক‌রপোরেশনের এক‌টি জন্মসনদ দা‌খিল করেন। তার সেই জন্ম সনদের তথ্য ব্যবহার করে নাগেশ্বরী উপজেলার স‌ন্তোষপুর ইউ‌নিয়নের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকু জ্ঞাতসারে তাকে নাগ‌রিকত্ব সনদ প্রদান করেন। এ ছাড়াও তার দা‌খিলকৃত কা‌জী কর্তৃক সরবরাহকৃত কা‌বিন নামায় বয়সের ঘর পূরণে বাধ্যতামূলক থাকলেও সে‌টি ফাঁকা রেখেই কা‌জী কা‌বিন নামার প্রতি‌লি‌পি সরবরাহ করেছেন। সরবরাহকৃত সকল সরকা‌রি কাগজপ‌ত্র জাল জা‌লিয়া‌তির আশ্রয় নেয়ায় আদালত সোনা‌লি খাতুনকে কুড়িগ্রাম সদর থানা পু‌লিশের নিকট সোপর্দ করেন এবং আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে আসামিদের বিরু‌দ্ধে মামলার নির্দেশ দেন।

কু‌ড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. শাহ‌রিয়ার বলেন, ‘গৃহবধূ সোনালী খাতুনকে থানায় রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’ 

এএল

আর্কাইভ