প্রকাশিত: অক্টোবর ১১, ২০২২, ০৪:১৬ এএম
শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী পরিচয়ে এবং স্বামীর অনুদানের টাকা উত্তোলনের নামে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থান থেকে সাতজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ সময় তাদের নিকট থেকে ৯টি মোবাইল ফোন, দুটি চেক বই ও নগদ ৩২ হাজার ৯’শত টাকা জব্দ করা হয়।
সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর শাকতলা র্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান র্যাব-১১ এর কোম্পানি অধিনায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
কোম্পানি অধিনায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, সময়ের সঙ্গে প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে সাধারণ জনগণকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তাদের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল কয়েকটি প্রতারক চক্র। সম্প্রতি কুমিল্লার কয়েকটি পরিবার এমন প্রতারণার শিকার হন। প্রতারণার শিকার মোছাম্মদ হাসিনা বেগম (৭০), মোছাম্মদ সালমা মির্জা (২১) ও মো. বিল্লাল হোসেনের (২৫) অভিযোগের প্রেক্ষিতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার (৯ অক্টোবর) রাতে প্রতারণার মূল হোতা নুসরাত জাহান জান্নাতসহ সাতজনকে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- লক্ষীপুর জেলার পশ্চিম জামিরতলী এলাকার বাসিন্দা নুসরাত জাহান জান্নাত (২৭), আব্দুর রহমান (৩৫), সাহাবুদ্দিন (৪৬), চন্দ্রগঞ্জ থানার মোহাম্মদনগর এলাকার পারভীন আক্তার (৪৫), কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ থানার কোটবাড়ী এলাকার মো. ইলিয়াস হোসেন, শালমানপুর এলাকার ফাতেমা আক্তার (৩৫) এবং বরুড়া উপজেলার এগারগ্রাম এলাকার মো. বশির উদ্দিন।
ভুক্তভোগী হাসিনা বেগম বলেন, ‘আমি দৌলতপুরের টিএন্ডটি মোড় এলাকার হাকিম মঞ্জিলের মালিক। জুলাই মাসে প্রতারক নুসরাত জাহান জান্নাত নিজেকে শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী পরিচয়ে আমার বাসার ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়। তিনি জানান এ বাসায় ২-৩ মাস থাকবে। কারণ ধর্মপুর এলাকায় নিজের জমিতে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করবেন। পরবর্তীতে জান্নাত আমার সঙ্গে বিভিন্ন কথাবার্তার মাধ্যমে আমার মন জয় করে এমন প্রতারণা করেন।’
আরেক ভুক্তভোগী সালমা মির্জা বলেন, ‘প্রতিবেশী হিসেবে জান্নাত আমার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরে স্বামীর সরকারি অনুদানের ১ কোটি টাকা ব্যাংকে জমা হওয়ার কথা জানান এবং বলেন ওই টাকা উত্তোলন করতে ব্যাংকে ১০% হারে ভ্যাট হিসেবে ১০ লাখ টাকা জমা দিতে হবে। তার কাছে ২ লাখ টাকা রয়েছে এবং তাকে ৮ লাখ টাকা সংগ্রহ করে দিতে বলে। তাহলে সে তার অনাথ ছেলেটিকে নিয়ে বাঁচতে পারবে। আর টাকা উত্তোলনের ৩০ মিনিটের মধ্যে আমার টাকার সঙ্গে ১ লাখ টাকা অতিরিক্ত ফেরত দিবে।’
কোম্পানি অধিনায়ক মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, ‘এ প্রতারক চক্র বিভিন্ন বাড়িতে ভাড়ায় উঠে বাড়ির মালিকসহ প্রতিবেশীদের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করে। পরে শান্তিরক্ষা মিশনে স্বামী নিহত হয়েছে, স্বামীর সরকারি অনুদানের উত্তোলনের নামে কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে কুমিল্লার বেশ কয়েকটি পরিবার থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
জেইউ