প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২২, ০২:০৭ এএম
বান্ধবীর ভেঙে যাওয়া সংসার জোড়া লাগাতে গিয়ে বান্ধবীর স্বামীর প্রেমে পড়ে যান আরেক বান্ধবী। তারপর দুজনেই বিয়ে করে নেন সেই যুবককে। এ ঘটনায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায়। বর্তমানে ওই দুই বান্ধবীর স্বামী একজনই।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর পৃথক কাজি আফিসে গিয়ে মাত্র তিন ঘণ্টার ব্যবধানে বিয়ে করেছেন এ দুই বান্ধবী। তারা একজনের বিয়েতে আরেকজন সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। দুটি বিয়েরই দেনমোহর হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। পাত্র প্রবাসী মিজানুর রহমান একই উপজেলার মটমুড়া ইউপির ছাতীয়ান গ্রামের মনিরুল ইসলামের ছেলে। দুই পাত্রী হলেন উপজেলার বামন্দী ইউপির নিশিপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে আছিয়া খাতুন ও একই এলাকার রুহুল আমিনের মেয়ে সাথী আক্তার।
জানা গেছে, আছিয়া ও সাথীর বাড়ি পাশাপাশি, বেড়েও উঠেছেন একসঙ্গে। তারা বাল্যবন্ধু। দুই বান্ধবীর সঙ্গে একজনের বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বামন্দী ইউপি নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) খাদেমুল ইসলাম ও মটমুড়া ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) মন্জুর আহমেদ।
দুই পরিবার সূত্রে জানা যায়, আছিয়া খাতুনের সঙ্গে গত ১৫ জানুয়ারি মিজানুর রহমানের আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয়। তবে মনোমালিন্য হওয়ায় বিয়ের তিন মাসের মধ্যে পরিবারের সম্মতিতে তাদের তালাক হয়ে যায়। এ ঘটনার কয়েক মাস পর মিজানুর ও আছিয়ার যোগাযোগ হয় আবার। এতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন সাথী। একপর্যায়ে মিজানুর ও আছিয়া নতুন করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এর মধ্যে ভালোলাগার সম্পর্ক হয় মিজানুরের সঙ্গে সাথীর। পরে দুই বান্ধবী মিলে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে মিজানুর দুজনকেই বিয়ে করেন।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি আছিয়াকে খুব ভালোবাসি। আছিয়ার সঙ্গে আবার সংসার করতে চাইলে সে ও সাথী মিলে আমাকে প্রস্তাব দেয় তাদের দুই বান্ধবীকেই বিয়ে করতে হবে। সেই মোতাবেক আমি গত ১৬ সেপ্টেম্বর পাঁচ হাজার টাকা নগদ দেনমোহরে দুই কাজি অফিসে গিয়ে প্রথমে আছিয়াকে ও পরে সাথীকে বিয়ে করি।’
তিনি বলেন, ‘আয়েশার বিয়েতে সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত থেকেছে সাথী আর সাথীর বিয়ের সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত থেকেছে আছিয়া। আমরা তিনজনই কাজি অফিসে তথ্য গোপনে বিয়ে করি। বিয়ের দিন বিকেলে দুজনই একসঙ্গে স্ত্রীর মর্যাদা নিয়ে আমার বাড়িতে অবস্থান করে। এর এক দিন পর দুজনই আবার নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যায়। বতর্মানে আমার দুই স্ত্রী তাদের মায়ের বাড়িতে অবস্থান করছে।’ আছিয়া ও সাথী জানান, তারা দুই বান্ধবী ছোটবেলা থেকে বোনের মতো বড় হয়েছেন। এক স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে চান।
আছিয়ার বাবা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আছিয়া ও মিজান দুজনে বিয়ে করবে বলে আমাকে জানিয়েছিল। আমি তাতে সর্মথনও দিয়েছিলাম। কিন্তু সে দুজনকে বিয়ে করেছে। এখন মিজানকে একজনের সঙ্গে সংসার করতে হবে, তা আছিয়া হোক অথবা সাথী।’
আছিয়া ও সাথী আক্তারের ওয়ার্ড নিশিপুর গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শাহ আলম জানান, ‘দুই বান্ধবীর পরিবার এই বিয়ে মেনে নিতে নারাজ। দুই পরিবারের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তাদের সিদ্ধান্ত যে কোনো একজনের সঙ্গে মিজানকে সংসার করতে হবে।’
জেডআই/