প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২, ০৮:৪১ পিএম
ছাত্রলীগ কর্মীর জন্মদিনে না যাওয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। শাখা ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের কয়েকজন কর্মীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ.এফ. রহমান হলের ২১২ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার রেদওয়ান আহমদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তিনি অনলাইল পোর্টাল ঢাকা মেইল ও দৈনিক নয়া শতাব্দীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আরশিল আজিম নিলয়, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শোয়েব আতিক। অভিযুক্ত দুজনই শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের কর্মী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
রেদওয়ান আহমদ জানান, বিজয় গ্রুপের এককর্মীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে না যাওয়ায় তাকে রুমে এসে মারধর করেছে অভিযুক্তরা।
তিনি বলেন, ‘গতকাল বিজয় গ্রুপের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এক কর্মীর জন্মদিন ছিল। এ জন্য ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ১০-১৫ জন আমার রুমে এসে জিজ্ঞেস করে আমি জন্মদিনের প্রোগ্রামে যাইনি কেন। আমি জানাই যে আমি এই রুমে পলিটিক্যাল কর্মী হিসেবে থাকি না। বিজয় গ্রুপের নেতা আল-আমিন ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে আমি এই রুমে উঠি, তবে পলিটিক্যাল কর্মী হিসেবে না। আমি মোবাইলে আল-আমিন ভাইয়ের সঙ্গে শোয়েব আতিকের কথা বলিয়ে দিই।’
তিনি জানান, এর ১০-১৫ মিনিট পরে আরশিল আজিম নিলয়, শোয়েব আতিকসহ তারা আবার রুমে আসে এবং জন্মদিনে না যাওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করে। আরশিল আজিম নিলয় বলে, পলিটিক্স না করে কীভাবে হলে থাকিস। এক পর্যায়ে মারধরের হুমকি দেয়। আমি প্রতিবাদ করলে নিলয় তার জুনিয়রকে আমাকে মারধর করার নির্দেশ দেয়। পরে শোয়েব আতিক আমাকে নাকে-মুখে কিল-ঘুষি মারা শুরু করে। একপর্যায়ে আল-আমিন ভাইকে ফোন দিলে এর মধ্যেও আবার কিল-ঘুষি দেয়া শুরু করে। পরে আমি চবি সাংবাদিক সমিতিকে জানালে তারা ও প্রক্টরিয়াল টিম এসে আমাকে উদ্ধার করে।
তিনি বলেন, ‘মারধরের সময় তারা বলে, পলিটিক্স না করলে এই রুমে থাকতে পারবি না। রুমে থাকলে আবার মারধর করা হবে বলেও হুমকি দেয় তারা। আমি এই ঘটনায় প্রক্টর বরাবর রাতেই লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত আরশিল আজিম নিলয়কে একাধিক বার ফোন দেয়া হলে তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। আরেক অভিযুক্ত শোয়েব আতিককে ফোন দিলে তার ফোন অন্যজন রিসিভ করে।
বিজয় গ্রুপের নেতা আল আমিন বলেন, ‘সাংবাদিকদের গায়ে হাত তোলা আমরা কখনোই সমর্থন করি না। ঘটনার সময় রেদওয়ান আমাকে কল দিয়েছিল। আমি নিষেধ করার পরও তারা ওর গায়ে হাত তুলেছে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি৷’
চবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেবো না। কিছুদিন আগেও সাংবাদিকদের সঙ্গে ছাত্রলীগের বিজয় গ্রুপের অনুসারীরা ঝামেলা করেছিল। আমরা অভিযোগ দেয়ার পরও প্রশাসন শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এবার যদি অভিযুক্তদের বহিষ্কার না করে, তাহলে আমরা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সে সময় টহলে ছিলাম। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে হলে যাই। ভুক্তভোগী আমাদের একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমরা একটি তদন্ত কমিটি করবো আজ।’
এআরআই/এএল