প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২২, ০৬:১৫ পিএম
রংপুরের কাউনিয়ায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের খোলা মাঠে সন্তান জন্ম দিয়েছেন রিতু আক্তার (২০) নামের এক নারী। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্বজন ও স্থানীয়রা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন।
রিতু আক্তার জেলার পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগর চালনিরপাড় গ্রামের সাগর মিয়ার স্ত্রী।
শুক্রবার বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্ত্বরে সন্তান জন্ম দেয়ার একটি ছবি ভাইরাল হয়। এতে দায়িত্বরত চিকিৎসকদের অবহেলা রয়েছে বলে মন্তব্য করছেন অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হলে ওই মা ও নবজাতককে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়।
জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে পরিবারের লোকজনসহ প্রসব ব্যথা নিয়ে কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন রিতু আক্তার। সেখানকার চিকিৎসক ও নার্সরা ওই নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর গর্ভের সন্তানের অবস্থান উল্টো দিকে বলে স্বজনদের জানান এবং দ্রুত তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন।
রোগীর স্বজনরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্ত্বরে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। একপর্যায়ে বেলা দেড়টার দিকে ওই নারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রাস্তার ধারে একটি ছেলে সন্তান জন্ম দেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে কর্তৃপক্ষ তাদেরকে সেখানে ভর্তি করেন। বর্তমানে কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ওই মা ও নবজাতকের চিকিৎসা চলছে।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স ঠিকমতো রোগীকে দেখেননি। বাধ্য হয়ে রোগীকে রংপুর নিয়ে যেতে অ্যাম্বুলেন্স খুঁজতে থাকার সময় চত্ত্বরেই বাচ্চা প্রসব হয়।
হাসপাতালে আসা অনেকেই বলেন, ‘চিকিৎসক ও নার্সরা চেষ্টা করলে রাস্তায় সন্তান জন্মের ঘটনা ঘটতো না। এখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সের অবহেলা রয়েছে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. সাহেদ সাব্বির আহমেদ জানান, তারা বাড়িতে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করেছে। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে হাসপাতালে আসে। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে গর্ভবতী মায়ের মঙ্গলের স্বার্থে রংপুরে নিয়ে যেতে পরামর্শ দিয়েছি। এরই মধ্যে হাসপাতাল চত্বরে সন্তান প্রসবের ঘটনাটি ঘটেছে। বর্তমানে মা ও শিশু দুজনের অবস্থা ভালো রয়েছে।
এ ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলা নয়, অদক্ষতাকে দায়ী করে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি শোনার পরই আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ওই মা ও শিশুকে বর্তমানে মহিলা ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। তারা দুইজনই সুস্থ আছেন। নার্সদের কোনো গাফিলতা থাকলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জেইউ