প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২, ০৮:২৩ পিএম
দরজায় কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। আগামী ১ অক্টোবর মহা ষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে বৃহৎ এ উৎসব শুরু হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এ বছর পূজামন্ডপের সংখ্যা বেড়েছে আগের চেয়ে বেশি। গত বছর জেলায় প্রায় ৫৮০টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হলেও এ বছর ৬০০ মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। পূজাকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততায় দিন পাড় করছেন প্রতিমা শিল্পীসহ পূজা আয়োজকরা। প্রতিমা বানানোর কাজ শেষে এখন নিপূণ হাতের ছোঁয়ায় প্রতিমাগুলোকে রং তুলির আঁচড়ে প্রাণবন্ত করে তোলা হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন মন্ডপে নান্দনিক করে তোলার জন্য চলছে বিশালাকার গেইট, প্যান্ডেল নির্মাণসহ ডেকোরেশনের কাজ। বিভিন্ন স্থান থেকে ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্টের লোকজন এসে প্রতিটি মন্ডপকে সাজিয়ে তুলছেন আপন মহিমায়। শুক্রবার শহরের শিববাড়ি, দক্ষিণ কালিবাড়ি, আনন্দময়ী কালিবাড়ি, রায় সাহেব বাড়িসহ শহরের বিভিন্ন মন্ডপে গিয়ে দেখা যায়, পূজার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন পূজা আয়োজকসহ প্রতিমা শিল্পী ও ডেকোরেশনের লোকজন। এ সময় আয়োজকরা জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ এ উৎসব ঘিরে থাকে নানা আয়োজন। তাই দিনগুলোকে স্মরণীয় করে রাখতে আমরা যার যার সাধ্যমতো মন্ডপগুলোকে সাজিয়ে দৃষ্টি নন্দন করে তুলছি। কারিগররা জানান, দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় শতাধিক প্রতিমা শিল্পী এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। রং তুলির আঁচড়ে সাজিয়ে তুলছেন প্রতিমা। অর্ডার অনুযায়ী প্রতিমা মন্ডপে মন্ডপে পৌঁছে দিতে তাদের দিন-রাত কাজ করতে হচ্ছে। করোনার কারণে গত দু’বছর তেমন অর্ডার না থাকলেও এবার প্রতিমা তৈরির কাজ বেড়েছে। তবে উপকরণের দাম বাড়ার পাশাপাশি শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় কাঙ্খিত লাভ নিয়ে তারা শঙ্কিত। খর, বাঁশসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। যে বাঁশ আগে ২ থেকে আড়াইশ টাকায় বিক্রি হতো তা সাড়ে ৩শ থেকে ৪শ টাকায় এবং প্রতি মণ খর ৩শ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৮শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও ডেকোরশেনের কারিগররা নিজেদের পূজামন্ডপগুলোকে সাজিয়ে তুলতে দিনভর কাজ করে যাচ্ছেন। তারা জানান বৈরী আবহাওয়ার কারণে তাদের কিছুটা সমস্যা হলেও নির্ধারিত সমেয়ই তারা তাদের কাজ শেষ করতে পারবেন।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রণব কুমার দাস উত্তম বলেন, সুন্দরভাবে পূজা অনুষ্ঠানে জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আমাদের মতবিনিময় হয়েছে। প্রশাসন থেকে আমাদের যে সকল নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেগুলো আমরা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আশা করি সকলের সমন্বয়ে আমরা এবারও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বৃহৎ এ উৎসব পালন করব। আগামী ৫ অক্টোবর বিজয় দশমীর মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজার সমাপ্তি ঘটবে।
এ ব্যাপারে শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন জানান, উৎসবমূখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বৃহৎ এই উৎসব সম্পন্ন করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। পূজা আয়োজকদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। মন্ডপগুলোর নিরাপত্তায় প্রতিটি মন্ডপে সিসি টিভি স্থাপনের জন্য আয়োজকদের বলা হয়েছে। এ ছাড়াও মন্ডপগুলোতে র্যাব, পুলিশ, আনসার সদস্যদের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবীরা তৎপর থাকবেন।
এএল/