• ঢাকা শুক্রবার
    ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

শিক্ষাসনদ ছিঁড়ে ফেলল চাকরি বঞ্চিত যুবক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২, ০৫:৫৯ পিএম

শিক্ষাসনদ ছিঁড়ে ফেলল চাকরি বঞ্চিত যুবক

দেশজুড়ে ডেস্ক

সরকারি ও বেসরকারি চাকরি করে অভাবের সংসারের হাল ধরবেন বাদশা মিয়া। এমন আশায় বুক বেঁধে সফলতার সঙ্গে স্নাতক শেষ করেন নীলফামারীর এই যুবক। কিন্তু মাসের পর মাস চাকরির জন্য চেষ্টা করেও সফল হননি তিনি। ইতোমধ্যে তার সরকারি চাকরির বয়সও শেষ হয়ে গেছে। তাই হতাশায় নিজের সব শিক্ষা সনদপত্র ছিঁড়ে ফেলেছেন চাকরি বঞ্চিত এ যুবক।

সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে নিজের শিক্ষা জীবনে অর্জিত সব একাডেমিক সনদপত্রগুলো এক এক করে ছিঁড়ে ফেলেন বাদশা মিয়া।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ সুন্দর খাতা গ্রামের বাসিন্দা মহুবার রহমানের ছেলে বাদশা মিয়া। অভাবের সংসারে ছয় ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়।

২০১৪ সালে তিনি নীলফামারী সরকারি কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে অর্থের অভাবে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করতে পারেননি। বাদশা ২০০৭ সালে জিপিএ ৩.৯২ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে দাখিল, ২০০৯ সালে জিপিএ ৪.০৮ পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে আলিম এবং ২০১৪ সালে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ২.৬৬ জিপিএ নিয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বাদশা ভিডিওতে বলেন, ‘আসলে আমার ভাগ্যটাই খারাপ! কত মানুষ ভুয়া সার্টিফিকেট নিয়া করে খাচ্ছে। আর আমি এত সার্টিফিকেট নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও একটা সরকারি বা বেসরকারি চাকরি জোটাতে পারিনি। সার্টিফিকেট অনুযায়ী চাকরির বয়স শেষ, এখন এগুলো রেখে লাভ কি? বয়স থাকতেই তো চাকরি জোটাতে পারিনি।’

বাদশা আরও বলেন, ‘আমার বাবা খেয়ে না খেয়ে আমাকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা ও ছোট ভাই-বোনদের মুখের দিকে তাকাতে পারি না। বর্তমান সমাজে সবচেয়ে অসহায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষিত ছেলেরা। এরা না পারে চাকরি জোটাতে, আবার অর্থের অভাবে ব্যবসা বাণিজ্যও করতে পারে না।’

বাদশার বাবা মহুবার রহমান জানান, চাকরির বয়সসীমা শেষ হওয়ায় বেশ কিছুদিন থেকে হতাশায় ভুগছিল বাদশা। দিন দিন হতাশা বেড়ে যাওয়ায় সে তার একাডেমিক সার্টিফিকেটগুলো কাউকে না জানিয়ে ছিঁড়ে ফেলেছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বেলায়েত হোসেন বলেন, আমরা যুব উন্নয়নের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আওতায় তাকে নিয়ে আসব যাতে সে উদ্যোক্তা হতে পারে। আমরা তো একটি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করতে পারবো না। যাতে সে চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেই একজন সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে, আগামী যেকোনো বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের আওতায় আমরা তাকে অবশ্যই আনব।

জেডআই/

আর্কাইভ