প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২, ০৫:৫৭ পিএম
বরিশাল রুপাতলী বাস মালিক সমিতির অত্যাচারের প্রতিবাদে বরগুনায় সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। আর এতে ভোগান্তিতে পড়েছে বরগুনা থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও যশোরে যাতায়াত করা যাত্রীরা।
বরগুনা জেলা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্তে বরগুনা-ঢাকা রুটে চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বরিশাল রুপাতলী বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতি দূরপাল্লার পরিবহন থেকে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করে আসছে। বার বার চাঁদার পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে তা দিতে অস্বীকার করে বরগুনা জেলা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন পরিচালনা কমিটি। ফলে শ্রমিকদের ওপর নানা অত্যাচার-জুলুম শুরু করে। তারা বাকেরগঞ্জ-বরগুনার সড়কে দু’মাস ধরে গাড়ি চলাচলে বাধা দিচ্ছেন। তাদের জুলুম-নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা পেতে এই অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন পরিচালনা কমিটি।
বরগুনা-ঢাকা রুটে বাস চালক শফিক বলেন, গত ২০ বছর ধরে এই সড়ক দিয়ে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল করে আসছে। বরগুনা থেকে ফেরি ছাড়া ঢাকার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগের একমাত্র সহজ মাধ্যম এই সড়ক। তবে এখন এই সড়কে দূরপাল্লার পরিবহন চলাচলে বাধা দিচ্ছেন এবং আমাদের শ্রমিকদের নির্যাতন করছেন রূপাতলীর মিনি বাস মালিক সমিতির নেতারা। ফলে বাধ্য হয়ে বরগুনার যাত্রী পরিবহনের জন্য দূরপাল্লার বাসগুলোকে লেবুখালী, পটুয়াখালী ও আমতলী ঘুরে পায়রা ফেরি পার হয়ে বরগুনায় আসতে হচ্ছে। এতে তাদের অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছে। রূপাতলী বাস মালিক সমিতির অত্যাচার ও স্বেচ্ছাচারিতা বন্ধের দাবিতে বরগুনা চলাচল করা সব দূরপাল্লার বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছি।
ঢাকার উদ্দেশে আসা যাত্রী শামীম বলেন, আমার কালকে চাকরিতে জয়েন করার কথা তাই আজকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছিলাম। কিন্তু বাস স্টান্ডে এসে দেখি বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এখন ঢাকা যাব কিভাবে জানি না। কালকে চাকরিতে জয়েন না কটতে পারলে আমার পরিবার অনেক সমস্যায় পরে যাবে।
বরগুনা জেলা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহবায়ক রোকনুজ্জামান বলেন, বরিশাল রুপাতলী বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতি দূরপাল্লার পরিবহন থেকে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি করে আসছে। প্রথমে ২০০ টাকা করে চাঁদা নেয় এরপর আস্তে পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। বার বার চাঁদার পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে টাকা দিতে অস্বীকার করে বরগুনা জেলা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন পরিচালনা কমিটি। ফলে শ্রমিকদের ওপর নানা অত্যাচার-জুলুম শুরু করে। তারা বাকেরগঞ্জ-বরগুনার সড়কে দু’মাস ধরে গাড়ি চলাচলে বাধা দিচ্ছেন। তাই আজকে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছি।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বরগুনা-বাকেরগঞ্জ সড়ক দিয়ে ঢাকা-বরগুনা রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বরিশালের রুপাতলী বাস মালিক সমিতির মালিক ও শ্রমিকরা। ফলে বাসগুলো পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ এবং বরগুনা জেলার আমতলী ফেরি পার হয়ে বরগুনা থেকে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়া-আসা করছে। এতে ১০ ঘণ্টা সময় লাগছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে ঢাকা মুখী যাত্রীরা। পাশাপাশি পদ্মা সেতুর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ রুটের যাত্রীরা।