• ঢাকা বুধবার
    ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১

ডিবি পরিচয়ে প্রতিবন্ধীর দোকানে চাঁদাবাজি, তোপের মুখে টাকা ফেরত দিলেন ফরহাদুল

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২, ০৭:২৬ পিএম

ডিবি পরিচয়ে প্রতিবন্ধীর দোকানে চাঁদাবাজি, তোপের মুখে টাকা ফেরত দিলেন ফরহাদুল

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে নৌকা ভ্রমণ শেষে লাইফ জ্যাকেট পরিধান করে ডিবি পুলিশ সেজে চরাঞ্চলের বিভিন্ন দোকানের ট্রেড লাইসেন্স যাচাই বাছাইয়ের নামে চাঁদাবাজি করে জনতার তোপের মুখে টাকা ফেরত দিয়ে ক্ষমা চেয়ে রক্ষা পেলেন ফরহাদুল ইসলাম ফরহাদ নামে এক সাংবাদিক।

অভিযুক্ত ফরহাদুল ইসলাম সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের ক্রীড়া ও নাট্য সম্পাদক এবং দৈনিক ভোরের সময় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার। তার ফেসবুক আইডির নাম হচ্ছে ফরহাদুল ইসলাম ক্রাইম রিপোর্টার।

জানা যায়, উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের কশিম বাজারে গত ১৫ সেপ্টেম্বর শারিরীক প্রতিবন্ধী দোকানদার ইসলাম মিয়ার ‘ইশা মণি স্টোরে‍‍`’ দোকানের ট্রেড লাইসেন্স যাচাই করার নামে সাংবাদিক ফরহাদসহ আরও কয়েকজন ১৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। দোকানদার টাকা দিতে অস্বীকার করলে আইনের ভয় দেখিয়ে চাপের মুখে ফেলে আট হাজার টাকা নিয়ে ফরহাদ অন্যান্য দোকানের লাইসেন্সও যাচাই করতে থাকেন।

স্থানীয়রা জানায়, সাংবাদিক ফরহাদুল ইসলাম ফরহাদসহ তার সঙ্গীরা ‘গণউন্নয়ন কেন্দ্র’ লেখা সম্বলিত লাইফ জ্যাকেট পরে কাশিম বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মতোই দোকান পরিদর্শন করেন। পরে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অবগত করেন। তখন জানতে পারেন ফরহাদ প্রশাসনের কেউ না। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোজাহারুল ইসলামকে মুঠোফোনে স্থানীয়রা ঘটনাটি জানালে চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিকভাবে পরিষদের দফাদারকে সাংবাদিক ফরহাদসহ অন্যদের আটক করার নির্দেশ দেন। পরে স্থানীয়রাসহ দফাদার খেয়াঘাটে গিয়ে নৌকা আটকিয়ে প্রতিবন্ধী দোকানদারের আট হাজার টাকা উদ্ধার করেন। এ সময় ফরহাদ ও তার সঙ্গীরা জনতার তোপের মুখে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

কাশিম বাজারের এসআর টেলিকমের প্রোপাইটর লাভলু মিয়া, মুরগী ব্যবসায়ী সুজা মিয়াসহ কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘ডিবি পরিচয়ে বাজারের কয়েকটি দোকানে অভিযান চালায়। এতে অনেকেই ভয়ে দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যায়। এ সময় তারা ইসলামের দোকান থেকে ৮ হাজার টাকা চাঁদা নেয়। পরে চেয়ারম্যানের নির্দেশে নৌকা আটকিয়ে টাকা ফেরত নেওয়া হয়েছে। এ সময় ফরহাদসহ অন্যরা ক্ষমা চাইলে তাদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়।’

ইশা মণি স্টোরের প্রোপাইটার ইসলাম মিয়া বলেন, ‘ফরহাদুলসহ কয়েকজন দোকানে এসে ডিবি পরিচয় দিয়ে দোকানের ট্রেড লাইসেন্স দেখতে চায়। দোকানের ট্রেড লাইসেন্সের মেয়াদ না থাকায় আমার কাছে ১৫ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ৮ হাজার টাকা চাঁদা নেয়। পরে স্থানীয়দের জানালে তারা নৌকা আটকিয়ে আমার টাকা উদ্ধার করে।’

এ বিষয়ে হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি ইতোমধ্যে ইউএনও মহোদয়কে অবগত করা হয়েছে। সাংবাদিক ফরহাদুলের কাছ থেকে প্রতিবন্ধী দোকানদার ইসলাম মিয়ার টাকা উদ্ধার করে মুঠোফোনে চিত্র ধারণ করা হয়েছে। এ নিয়ে আগামী উপজেলা মাসিক মিটিংয়ে আলোচনা করবো।’
সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, ‘তাৎক্ষণিক ঘটনাটি আমি শুনেছি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

 

এএল/

আর্কাইভ