• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চিরকুট লিখে মসজিদে ইমামের আত্মহত্যা

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২২, ০১:১৫ এএম

চিরকুট লিখে মসজিদে ইমামের আত্মহত্যা

দেশজুড়ে ডেস্ক

ভোলার দৌলতখানে মো. আবদুল হালিম (২৪) নামে এক মসজিদের ইমাম গলায় নিজের পাগড়ি পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। তার আগে নিজের হাতে সুইসাইড নোটে লিখে গেছেন তার মৃত্যুর জন্যে কেউ দায়ী নন। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) উপজেলার হাসমত ব্যাপারীর মসজিদে ইমামের কক্ষ থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে তিনটায় চরখলিফা ৭নং ওয়ার্ডের হাসমত বেপারী বাড়ির জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে ৯৯৯ এ সংবাদ পেয়ে পুলিশের এসআই মো. মনির হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে সুইসাইড নোটসহ মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।

ইমাম মো. আব্দুল হালিম ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রপ্রসাদ গ্রামের মো. ফারুক ফরাজীর ছেলে। দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের হাসমত ব্যাপারীর বাড়ির দরজার মসজিদে ইমামতি করতেন তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে ইমাম আব্দুল হালিম এশার নামাজ পড়িয়ে মসজিদ-লাগোয়া তাঁর কক্ষে চলে যান। রাত ১২টার দিকে আত্মীয়স্বজনদের মোবাইল ফোনে ‘আর বেঁচে থাকবেন না’ বলে একটি এসএমএস পাঠান। স্বজনেরা তখন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন, কিন্তু তাঁর ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ অবস্থায় তাঁর ভগ্নিপতি রাসেদ রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই মসজিদে আসেন। মসজিদে এসে আব্দুল হালিমকে তাঁর কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার করেন। চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসেন। পরে দৌলতখান থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশ জানায়, আব্দুল হালিম ফ্যানের সঙ্গে গলায় পাগড়ি পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়েছেন। ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’। মৃত্যুর পর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য প্রশাসনকে না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁর চার মাসের সন্তানের দিকে খেয়াল রাখার কথাও লিখেছেন। কারা টাকা পাবেন সেটিও চিরকুটে উল্লেখ করেছেন আব্দুল হালিম।

পুলিশ আরও জানায়, আব্দুল হালিম মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি দৌলতখানের চর খলিফা মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতেন। দুই বছর আগে বিয়ে করেন। তাঁর চার মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে স্ত্রী সেই চার মাসের সন্তান রেখে চলে গেছেন। পারিবারিক এসব বিষয় ও ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ায় আব্দুল হালিম হতাশায় ভুগছিলেন। এই হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হবে।’

জেডআই/

আর্কাইভ