• ঢাকা বৃহস্পতিবার
    ০৭ নভেম্বর, ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১

বাবুল আক্তারের কক্ষে তল্লাশির অভিযোগ অস্বীকার পুলিশের

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২২, ০২:৩৬ এএম

বাবুল আক্তারের কক্ষে তল্লাশির অভিযোগ অস্বীকার পুলিশের

আদালত প্রতিবেদক

ফেনী কারাগারে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের কক্ষে তল্লাশি করার ঘটনায় তদন্ত চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। তবে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও বাবুল আক্তারের কক্ষে তল্লাশির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ওসি কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করলেও বাবুল আক্তারের কক্ষে যাননি বলে জানান। ওসি জানান, ডাকাতি মামলার তদন্তের কাজে আসামির সঙ্গে কথা বলতে তিনি কারাগারে জেল সুপারের কক্ষে গিয়েছেন।

নিজাম উদ্দিন বলেন, কোনো কয়েদির রুমে ঢোকার তো প্রশ্নই আসে না। বাবুল আক্তারের আইনজীবীর অভিযোগটি ভিত্তিহীন। আর বাবুল আক্তার যে ফেনী কারাগারে আছেন সেটা আমি আগে জানতামই না। এখন আপনাদের মাধ্যমে জানলাম।

বাবুল আক্তারের আইনজীবী গোলাম মওলা মুরাদ বলেন, বাবুল আক্তার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টায় ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন কারাগারে প্রবেশ করে তার কক্ষে দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশি চালান। ওই সময় তাকে মানসিকভাবে হয়রানি করা হয়। এই ঘটনার তদন্ত ও বাবুল আক্তারের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ফেনীর জেল সুপারকে নির্দেশ দেয়ার আবেদন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সেদিন ওসি নিজাম উদ্দিনের কারাগারে ঢোকার দৃশ্য সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ যাচাই করলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে। জেল কোড অনুসারে থানায় কর্মরত কোনো পুলিশ কর্মকর্তা কোনভাবেই জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং আদালতের লিখিত অনুমতি ছাড়া কারাগারে ঢুকতে পারেন না। জেল কোড অনুসারে এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বাবুল আক্তারকে  মানসিক চাপে রাখতেই এ ধরনের কাজ বারবার করা হচ্ছে। কারাগারের অভ্যন্তরে একজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রবেশ করে কীভাবে একজন হাজতির কক্ষে তল্লাশি করেন?

ফেনী জেল সুপার মো. আনোয়ারুল করীম বলেন, ফেনী কারাগারে ঢুকে কারাভ্যন্তরে বাবুল আক্তারের কক্ষে গিয়ে তল্লাশি চালানোর অভিযোগ সত্য নয়। কারাগারে কারা পুলিশ ছাড়া অন্যদের প্রবেশের কোনো নিয়ম নেই। পুলিশ নিয়মিত কারাগার থেকে আসামি নিয়ে যায় এবং দিয়ে যায়।

ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, ফেনী মডেল থানার ওসির কারাগারে যাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। ফেনী কারাগারে বাবুল আক্তারের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে পিটিশনের বিষয়টি শুনেছি। এ বিষয়ে আদালত যে আদেশ দেবেন তাই হবে।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে কারাগারে বাবুল আক্তারের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে পিটিশন দাখিল করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ।

চট্টগ্রামের আলোচিত মিতু হত্যা মামলায় গ্রেফতার সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের ফেনী জেলা কারাগারের কক্ষে তল্লাশি চালিয়েছেন ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন, এমন অভিযোগ তুলে ওই ঘটনার তদন্ত চেয়ে আদালতে আবেদন করেন গোলাম মওলা মুরাদ।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুন্নেছার আদালতে এ আবেদন করা হয়। এ ব্যাপারে শুনানির জন্য ১৯ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। একই দিন পিবিআই প্রধান বনজ কুমারসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে বাবুল আক্তারের করা মামলার আবেদনের শুনানিও অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। ওই ঘটনার পরদিন বাবুল আক্তার বাদী হয়ে একটা মামলা দায়ের করেন। এই মামলার তদন্ত শেষে পিবিআই ২০২১ সালের ১২ মে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। একইদিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন আরেকটি মামলা করেন। মামলায় বাবুলসহ আট জনকে আসামি করা হয়।

এ মামলায় গত বছরের ১২ মে বাবুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

জেডআই/

দেশজুড়ে সম্পর্কিত আরও

আর্কাইভ