নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালীতে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতা বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলায় জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমানসহ ১৮৮ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও সাড়ে ৯শ’ বিএনপি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়। মামলায় মোট ২৯ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। বুধবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে তাদের বিচারিক আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুধারাম মডেল থানার (ওসি) তদন্ত মিজানুর রহমান পাঠান। এর আগে, মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) রাতে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হাশেম বাদী হয়ে এবং পুলিশের পক্ষে এসআই জাহাঙ্গীর ও এসআই আবদুস জাহের বাদী হয়ে মোট ৩টি মামলা দায়ের করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য দাউদ উদ্দিন (৫০), মধ্যম করিমপুর গ্রামের বেলাল হোসেন (৫১), নেওয়াজপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ (৭১), শংকরপুর গ্রামের আব্দুল (৫৫), লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার নুরুল আমিন বেচু (৫১), অলিপুর গ্রামের ফখরুল ইসলাম (২৯), করিমপুরের বাকি বিল্লাহ তুষার (৩০), মোকারর হোসেন (২৫), মমিন উল্লাহ (৫০), চরশুল্লকিয়ার সাইফুল (২০), কৃষ্ণরামপুর গ্রামের রাহাত (৩০), ধর্মপুরের ফারুক (৪৫), কাদির হানিফের আবুল হোসেন (৪১), কাঞ্চনপুরের একরাম হোসেন (৩০), লক্ষ্মীনারায়ণপুরের আবদুল করিম শুভ (৫২), নোয়াখালী মৌজার আবদুল কাদের (২৭), এওজবালিয়ার সোহেল (৩২), জামালপুর গ্রামের সাকিব (১৯), সাইফুল (১৯), বাদশা (১৯), সাইফুল ইসলাম (১৯), বিনোদপুরের মো. মারুফ (১৯), পশ্চিম শরীফপুরের রাকিব (১৯), চরশুল্লাকিয়ার আতিকুর রহমান (১৯), নেয়ামতপুর গ্রামের আবুল কালাম (২৫), পশ্চিম সাহাপুরের কামরুল হাসান (৪৪), পূর্ব শুল্লকিয়ার জামাল উদ্দিন (৪৮) ও দক্ষিণ মহতাপুরের সোহাগ (৩৫), চররশিদ গ্রামের নোমান (১৯)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের সামনে জ্বালানি তেল, পরিবহন ভাড়া, লোডশেডিং, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের ঊর্ধ্বগতিসহ ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম এবং সেচ্ছাসেবক দল নেতা আব্দুর রহিম হত্যার প্রতিবাদে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। একইসময় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে বিএনপির দেশব্যাপী চলমান বিক্ষোভের প্রতিবাদে মিছিল ও সমাবেশ করেছিল আওয়ামী লীগ। এ সময় বিএনপির একটি মিছিল বড় মসজিদ মোড় হয়ে প্রেসক্লাবের দিকে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের সমাবেশ ও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনার ঘটে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের ছোঁড়া ইটের আঘাতে পুলিশের ৮ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয় ও সুধারাম থানার ওসির গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৮ রাউন্ড শটগানের ফাঁকাগুলি ছোঁড়ে। পরে তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে ৩৩ জনকে আটক করে। রাতে মামলা দায়ের হলে আটককৃত ৩৩ জনের মধ্য থেকে ২৯ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
সুধারাম মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান মামলা ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মঙ্গলবার বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল থেকে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ সদস্য আহত হয় এবং পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ঘটনায় দুটি মামলা করেছে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগের এক নেতা বাদী হয়ে আরও একটি মামলা করেন।’
এএল/
ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন